বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

নেপাল ভ্রমণ (জুন ২০২৩): পর্ব-০৭ (শেষ পর্ব)

 পর্ব তালিকা: চন্দ্রগিরি>>পোখারা>>জমসম>>মুক্তিনাথ>>তাতোপানি>>পোখারা>>থামেল

২৯-জুন-২০২৩ পোখারা থেকে কাঠমুন্ডু

এই ভ্রমণের শুরুর দিকে কাঠমুন্ডু থেকে পোখারা আসার সময়ে জীপের মধ্যে আমাদের পরিবারের ৩ জনের সাথে নেপালি ট্যূর অপারেটর মিঃ দীপক কৈরালা এবং ওনার মিসেস ছিলেন। মূলত সেদিন পোখারায় ঝড়-বৃষ্টির কারণে ফ্লাইট ক্যান্সেল হওয়াতেই ওনাদের একই গাড়ি শেয়ার করতে হয়েছিল। তাই সেদিন একটু কষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তবে এর পর থেকে সব সময়েই গাড়িতে আমরা ৩ জনই। তাই দীর্ঘ ৮ ঘন্টার পথ হলেও সেদিনের মত কষ্ট হয়নি। মাত্র ২০০ কিলোমিটার যেতে ৮ ঘন্টা লাগার কারণ এইদিকের ৮০ কিলোমিটার জায়গা আন্ডার কনস্ট্রাকশন আর বাকী রাস্তা ভাল হলেও পাহাড়ী আঁকা-বাকা পথ - সবখানে ওভারটেক করার সুযোগও নাই তাই। মাঝামাঝিতে লাঞ্চ ব্রেক নেয়ার আধাঘন্টার পথ আগে একটু বাথরুম ব্রেক নেয়া হল একটা ফুয়েল পাম্প স্টেশনে।

এই স্টেশনে শুকনা খাবারের দোকান আছে। ওদিকে একটা ছোট রেস্টুরেন্টের মত আছে। পেছনে চমৎকার টয়লেট ইউনিট।

সামনের টেবল চেয়ারগুলো রেস্টুরেন্টের সাথে, আর দুরে টয়লেট দেখা যাচ্ছে।

ইলেক্ট্রিক ভেহিকেল (গাড়ি) বা EV চার্জিং স্টেশন আছে একটা যেটা আমার জন্য একটা নতুন জিনিষ ছিল।

আরো আধাঘন্টা পরে সেই ডাল-ভাত পাওয়ার রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া। পনিরের আইটেম।

চাওমিন। এই রেস্টুরেন্টে যাওয়ার সময়ও খেয়েছিলাম। ২য় পর্বে সেগুলোর ছবিও আছে।

এই সেই রেস্টুরেন্ট। রেলিংএর মধ্যে ডিজাইন হিসেবে আস্ত একটা সাইকেল লাগানো

বিকাল গড়িয়ে প্রায় সন্ধ্যা। কাঠমুন্ডুর কাছাকাছি জায়গায় চা-কফি বিরতি। আরেকপাশে ড্রিংকস-চিপস-বিস্কুটের দোকান। দামটা একটু বেশি ছিল বলে মনে হল - তবে কফির দাম ধরে কোনো কিছু তুলনা করাটা একটু বোকামী হতে পারে। এই সাদা গাড়িটাই আমাদের বাহন।

ড্রাইভার মহাশয় পোখারার বাসিন্দা। কাঠমুন্ডু তেমন একটা চেনেন না। আমরাই গুগল ম্যাপ দেখে দেখে আসতে থাকলাম। মাঝে অন্য আরেকজায়গা হয়ে যাওয়ার চেষ্টায় পথ ভুলে কিছু গলি-টলিতে ঢুকেও সময় নষ্ট করেছি। অবশ্য পথ ঠিক থাকলেও লাভ হত না, কারণ সন্ধ্যায় সেই জায়গা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। 

থামেল হল কাঠমুন্ডু ঘুরতে আসা বিদেশীদের পছন্দের থাকার জায়গা। ঢাকার গুলশান-বনানী বললে তুলনাটা ভুল হবে। কারণ এখানে সব পুরান ঢাকার মত চিপা গলি। সবই ওয়ান ওয়ে করে দিয়েছে।

অবশেষে আমাদের হোটেলে। বুটিক হোটেল। থামেলের চিপা গলির মধ্যে এমন উঠানওয়ালা হোটেল আশা করিনি।

হোটেলের ভবনে প্রবেশমুখ। আগের ছবির বাগানটা এই ছবিতে হাতের ডানদিকে।

ডিনারে আবার সেই থালি। ট্যূর অপারেটর আমাদেরকে কি ভেবেছিল কে জানে!

৩০-জুন-২০২৩

সকালের ব্রেকফাস্টে লিমিটেড বুফে ছিল

এই প্রথম কফি আর্ট পেলাম এখানে
নাস্তা করেই এয়ারপোর্টের পথে। আর যেই জায়গা দেখার ইচ্ছা ছিল সেটা খুলতে দেরী আছে। দেখতে চাইলে ফ্লাইট মিস হবে। তাই সোজা এয়ারপোর্টে। এয়ারপোর্টে অবশ্য ফ্লাইট ডিলে ছিল ঘন্টা দেড়েক।

ঘন্টাখানেকের ফ্লাইটে এইসব খাইতে দেয়।

ভিডিও #১০


খরচাপাতি

এবার সংক্ষেপে আমাদের খরচাপাতির হিসাবটা দেই: আমরা তিন জন গিয়েছিলাম।

১। প্লেন ভাড়া - এটা সিজন এবং কত আগে কেটেছেন সেই অনুযায়ী কম-বেশি হবে। দেড়মাস আগে কাটাতে আমাদের জনপ্রতি ৩০হাজার করে লেগেছিল।

২। নেপালে সবগুলো জায়গায় সম্পুর্ন গাড়ির সাপোর্ট + ৩ বেলা খাওয়া + হোটেল চার্জ + আনুষঙ্গিক অন্য চার্জ (থাকলে) - ৭ রাতের জন্য লেগেছিল: জনপ্রতি ৬৭৫ ডলার করে। এই ডলার প্রথমদিন এয়ারপোর্টে নেমে আমাদের ট্যূর অপারেটর দীপক কৈরালা সাহেবের হাতে হাতে দিয়ে দিয়েছিলাম।

৩। কাঠমুন্ডুতে এয়ারপোর্টে নামার পরেই ৭ দিনের প্যাকেজের সিম কার্ড নিয়েছিলাম, ৫ জিবি ডেটা সহ: ২৫০ নেপালী রুপী।

৪। আসার পথে তাতোপানির হোটেলে অতিরিক্ত ৫৫০০ রুপি দিতে হয়েছিল।

৫। রাস্তায় চা-কফির বিরতিতে সব মিলিয়ে ২ হাজার রুপীর মত।

৬। সূভ্যেনির কেনাকাটার খরচ।

সবগুলো প্রকাশিত পর্বের লিংক এই পাতার একেবারে শুরুতে দেয়া আছে। (সমাপ্ত)


 

কোন মন্তব্য নেই: