মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

নেপাল ভ্রমণ (জুন ২০২৩): পর্ব-০৩

পর্ব তালিকা: চন্দ্রগিরি>>পোখারা>>জমসম>>মুক্তিনাথ>>তাতোপানি>>পোখারা>>থামেল

২৬-জুন-২০২৩

সপরিবারে নেপাল ভ্রমণের ৪র্থ দিন সকালে: আমরা এখন জমসম নামক ছোট্ট শহরে। এই জুন মাসেও রাতে ঘুমানোর সময়ে গরম কাপড় পড়ে ডবল কম্বল নিয়ে ঘুমাতে হয়েছিল। তবে গোসলের জন্য কলে গরম পানির ব্যবস্থা ছিল। এই শহরের উচ্চতা সমূদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৭০০ মিটারের চেয়ে বেশি। আমাদের ঠিক সামনেই ছোট্ট এয়ারপোর্ট। তবে এই এয়ারপোর্টে বিমান আসার পথ মেঘে ঢাকা থাকায় সব ফ্লাইট বন্ধ ছিল। অথচ এই জায়গার ঝকঝকে আকাশ দেখলে সেটা বোঝা অসম্ভব।

সাত সকালে ওম'স হোম হোটেলের দরজা থেকে নীলগিরির চূড়াটা (নর্থ পিক ৭০৬১ মিটার)

ওম'স হোমের রেস্টুরেন্টে সকালের নাস্তা

জমসম থেকে ফিরতি পথে মারফা নামক গ্রাম দেখতে চললাম। পথে বিশাল উপত্যকা আর সেখানে সবুজ আপেল বাগান

বিরাট পাহাড় আর মাঝে বিরাট ছড়ানো নদী আর উপত্যকা
(এটা ভিডিওসহ ফটোব্লগ - আগে বলিনি নাকি?)

ভিডিও#৩: জমসম ও নীলগিরি


 

হোটেল থেকে মারফা নামক তিব্বতী গ্রামটা গাড়িতে মাত্র ১০ মিনিটের পথ। আগের দিন যাওয়ার সময়ে এটার পাশ দিয়েই গিয়েছিলাম তবে বেশি সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল বলে থামিনি। আজ এটা হেঁটে দেখবো বলে আসলাম।

Marpha গ্রামে তিব্বতীয় গ্রামের আদলে করা পাথরের বাড়িঘর

এটা একটা টুরিস্ট আকর্ষন


এই রকম জায়গায় নিজের একটা সেলফি না হলে চলে?!

 

দোকানে কী পাওয়া যায় তার একটা ধারণা পাওয়া যাবে। আপেলের চিপসটা খেতে দারুন। বেশি করে নিয়ে আসা দরকার ছিল ...

এরকম একটা জায়গা নিজের চোখে দেখে আসবো কখনো ভাবিনি


ঘরগুলোর চালে কাঠের স্তুপ, এটা সম্ভবত শীতের প্রস্তুতি

এরকম পূণর্ব্যবহার Reuse চমৎকার লেগেছে

ইলেক্ট্রিক ভ্যান দেখে বেশ অবাক হয়েছিলাম


হেঁটে বেড়ানো শেষের দিকে বাপ-বেটির খুশি খুশি সেলফি

আমাদের ড্রাইভার সাহেব সামনে কোনো এক জায়গায় আত্মীয়তা পাতিয়েছেন, সেখানে চা খেতে গিয়েছেন; আমরা অপেক্ষায়

(মারফা ভ্রমণের কিছু ভিডিও ক্লিপ)

ভিডিও#৪: মারফা - তিব্বতি গ্রাম


নদীর দেশের লোক, তাই নদী দেখে সুযোগ মত গাড়ি থামাতে বললাম। ইচ্ছে হল একটু কাছে গিয়ে দেখি। নদীর নাম কালী গান্দেকী। এটার অনুবাদ সম্ভবত কালো ময়লা / আবর্জনা। এই নদীর পানি ঘোলা। হয়তো আরো উজানে কোনো পাহাড় ক্ষয়ে বয়ে নিয়ে আসছে অবিরাম। এই অংশে স্রোত সেইরকম ... একবার পড়লে রক্ষা নাই।


 

অশান্ত নদীর পাশে শান্ত সেলফি


এটা একটা ৩৬০ডিগ্রী ভিউ। আসল ছবি দেখতে ক্লিক করুন

নদীর স্রোত মারাত্নক; তার সাথে খুব বাতাস। এর মাঝেই নদীর পাড় পাথরের ব্লক দিয়ে বাধাই করা হয়েছে কিছু জায়গায়
এমন জায়গায় ন্যাড়া পাহাড়গুলোর মাঝে উপত্যকায় সবুজের ছোপ দেখতে বেশ লাগছিল। তাই ...

এগুলো মূলত: আপেলের বাগান

(ধুম্বা লেক আর কালি গান্দেকি নদীর ঐ অংশের কিছু ভিডিও ক্লিপ)

ভিডিও#৫: কালি গান্দেকি নদী ও ধুম্বা লেক

 

 
হোটেল থেকে চেকআউট করে আজকের পরবর্তী লক্ষ্য হল ধুম্বা লেক পরিদর্শন করা তারপর আমাদের সর্বশেষ গন্তব্য মুক্তিনাথে যাওয়া।
 
আমরা চেক আউট করে গাড়িতে ওঠার আগে একটু নীলগিরির চূড়ার সাথে সেলফি তুললাম। পেছনে রানওয়ের অংশও দেখা যাচ্ছে। মেঘের কারণে ফ্লাইট বন্ধ থাকায় লোকজনকে গাড়ি ভাড়া করে ফিরে যেতে দেখেছি।

 
জমসম শহরটা একটা এক রাস্তার শহর মনে হল। পাশে এয়ারপোর্ট।

এই উজানের পথেই মুক্তিনাথ। তবে আপাতত আমাদের গন্তব্য একটু অন্যদিকে। একটু এগিয়ে পথের আরেকটা শাখা চলে গিয়েছে পাহাড়ি সেনাবাহিনীর ট্রেনিং ক্যাম্পের দিকে।

পেছনে বরফ চূড়ার পাহাড় আর হার্ট শেপের ধুম্বা লেক; প্রচন্ড বাতাস

এটা একটা ৩৬০ডিগ্রী ছবি। দেখতে এখানে ক্লিক করুন। লোড হলে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে চারিপাশ দেখতে পারবেন

জনপ্রতি ৩০ রুপি দিয়ে প্রবেশ করেছি, তাই সাইনবোর্ডের পাশে একটা ছবি না তুললেই নয় ...

এরকম রুক্ষ প্রান্তরে এমন একটা স্বচ্ছ পানির লেক অবাক করার মত। এতেও উপাসনা করার মত ডুবোপাথর আছে একটা।

লেকের চারপাশটা ছিমছাম, সংক্ষিপ আকারে সুন্দর করে উন্নয়ন করা হয়েছে

চমৎকার জায়গা, সারাদিন এখানে বসে কাটিয়ে দেয়া যায়; পেছনে বরফের ধারা নেমে আসা পাহাড় চূড়া দেখা যাচ্ছে

ধুম্বা লেক

ধুম্বা লেক, প্রবেশ পথের উল্টো দিক থেকে। দুরে প্রবেশ পথ, ভেতরের খাওয়ার দোকান আর ডানে টয়লেট দেখা যাচ্ছে

এখানে সংক্ষিপ্ত সফর শেষে আমরা রওয়ানা দিলাম মুক্তিনাথের পথে। এখান থেকে দেড় ঘন্টার পথ। এই টেম্পলটা হিন্দু এবং বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের জন্য পবিত্র তীর্থস্থান; পৃথিবীর উচ্চতম মন্দিরগুলোর একটা, এছাড়া হিন্দু ধর্মের ৮টি পবিত্রতম স্থানগুলোর একটি।

সবগুলো প্রকাশিত পর্বের লিংক এই পাতার একেবারে শুরুতে দেয়া আছে। (পরের পর্ব: এখানে)

কোন মন্তব্য নেই: