শনিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৩

মালদ্বীপ ভ্রমণ ২০২৩ (পর্ব-০৩)

 

সূচীপত্র:

 ২৩-এপ্রিল-২০২৩ রবিবার

মালদ্বীপ ভ্রমণের ৩য় দিনে আমরা মালে থেকে প্রাইভেট আইল্যান্ডে গেলাম। এই লেখার সেটার ছবিগুলো থাকবে। গতদিনে আমরা মালেতে ঘুরেছি আর সাবমেরিন রাইডে গিয়েছিলাম।

নতুন জায়গাতে বেড়াতে গেলে ভোরের সূর্যোদয় দেখার একটা ইচ্ছা থাকে সবসময়ই। তাই ভোরে চলে গেলাম হোটেলের সামনে। কিন্তু সেদিন পূর্ব আকাশে মেঘ ছিল তাই সূর্য ওঠার দৃশ্যটা ক্যামেরাবন্দী করতে পারি নাই। কিন্তু ঐ সময় ভাটা, তাই সামনের প্রাকৃতিক সুইমিং পুলে (অন্তত আমার তাই মনে হয়েছিল) কার্যত এক হাঁটু পানি। বামে একটা লোক সেই এক হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়ে।

এরপরে নাস্তা খাওয়ার আগেই কন্যা সমেত এখানে একটু জলকেলী করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ধরা খেয়েছি। কারণ পায়ের নিচের বালু - মোটেও বালু নহে। এখানে ধারালো কোরাল পাথর দিয়ে ভর্তি। পায়ের তলায় প্রচুর ব্যাথা পেয়ে ভগ্ন মনোরথে ফেরত আসতে হয়েছিল।

নাস্তার পর সবকিছু প্যাক করে রেডি হয়ে চেকআউট করলাম আর হোটেলের আয়োজিত গাড়ি আমাদেরকে সেই এয়ারপোর্টে দিয়ে আসলো। সেখানে একজন মহিলা অফিসার প্রাইভেট আইল্যান্ডের পক্ষে আমাদের বুঝে নিল। আমাদের সব লাগেজে ট্যাগ লাগিয়ে একটু অপেক্ষা করতে বললো। কারণ আগের যে স্পীড বোট যাওয়ার কথা সেটা এখন ছাড়বে। ১৫ মিনিটের পথ। তাই কিছুক্ষনের মধ্যে ফিরে এসে আমাদের নিয়ে যাবে। এই কিছুক্ষণ মানে ৪৫ মিনিট যেটা আরেকজন স্টাফ আমাদের আগেই বলেছিল।

কন্যা নানা-নানীর সাথে বসে অপেক্ষারত। আর এদিকে আমি আর গিন্নি এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াই আর গরমে কাহিল হই, কারণ এয়ারপোর্টের এই অংশ নন-এসি

প্রাইভেট আইল্যান্ডের লোকজনই আমাদের লাগেজ তুলে নিল। তারপর যাত্রীদের উঠতে বললো।

আমাদের লাগেজ তোলা শেষ। এই যে আমরা ঘাটে স্পীডবোটের সামনে দাঁড়িয়ে আছি, পেছনে রাস্তার ওপারেই কিন্তু এয়ারপোর্ট।

সকলকে লাইফ জ্যাকেট দিয়ে সেইরকম সোফাওয়ালা স্পীডবোটে করে রওনা দিলাম। জায়গাটা ১৫ কিলোমিটারের পথ।

আইল্যান্ডে পৌঁছেই মন ভালো হয়ে যায় চারপাশের দৃশ্যে। গরমেও খারাপ লাগে না।

ওয়েলকাম ড্রিংক, চেক ইন। পাশেই বার। OBLU XPERIENCE, Ailafushi। আইলাফুসি হল দ্বীপটার নাম।

আমাদের পাসপোর্ট ফেরত দিয়ে বললো তোমাদের রুমে লাগেজ পৌঁছে যাবে, রুম রেডি হতে হতে বরং লাঞ্চ করে আস। সুইমিং পুলের ঐপাশেই buffet লাঞ্চের জায়গা। সেখানে গেলেই একজন আমাদের নতুন দেখে পুরা জায়গাটা চিনিয়ে দিল। একদিকে এশিয়ান, আরেকদিকে ইন্ডিয়ান, আরেকপাশে কন্টিনেন্টাল, আরেকদিকে সালাদ+ডেজার্ট সেকশন। ড্রিংকস সেকশন দুইটা - একটাতে ৫ রকম জুসের সাথে ফ্রিজ ভর্তি সফট ড্রিংকস, পানি ও বিয়ার। আরেকটাতে ১০ রকম কফি, চা, দুধ সহ সাদা-বাদামী এবং সুগার কাট চিনি ইত্যাদি। গরম দেখে আমরা খুব করে ড্রিংকস, আইসক্রিম ইত্যাদিও খেলাম।

 Buffet এর খানা
এরপর রিসিপশনে ফিরে আসার পর বললো তোমাদের রুম রেডি। রুম কার্ড দিল। আর বললো ওখানে অপেক্ষা কর কার্ট (গলফ কার্ট) তোমাদেরকে নিয়ে যাবে। আমরাও গলফ কার্টে চড়ে ভুলবশত উল্টাপথে পুরাটা ঘুরে সমস্ত ওয়াটারভিলা দেখে টেখে তারপর অন্য মাথায় আমাদের ভবনে পৌছালাম।
মূল বেডরুমের বাইরের দৃশ্য। বারান্দাতেও একটা বিশাল ডিভান আছে।

মোটামুটি একটা স্টুডিও এপার্টমেন্ট ৫০বর্গমিটারের।

মাস্টার বেডের সাথে লাগোয়া ড্রেসিং রুম। ওপাশে বিশাল ওয়াশরুম।


এদিকে একটা চিলড্রেনস বেডরুম। এটার সথেও একটা বড় ওয়াশরুম। এটাতেও টিভি এসি আছে।

বারান্দা দিয়ে বাইরের দৃশ্য। প্যানারোমা। এখানে ক্লিক করলে ঘুরিয়ে দেখা যাবে বলে আশা করছি।

পেছনের সমুদ্রে অনেকক্ষণ দাপাদাপি করে এসে রুমের ওয়াশরুমে শাওয়ার নিলাম। ভেঁজা কাপড় বারান্দায় মেলে ভেতরে বসে বসে বিকেল দেখা। আর আয়েস করে চা। সাথে গতকাল সন্ধ্যায় হুলুমালে থেকে কেনা স্ন্যাকস ... আহা

রাতে আবার সেই ডাইনিং এ গিয়ে বিশাল খাওয়া দাওয়া করে আসলাম। পানি ছাড়াও রুমের মধ্যে ফ্রিজে স্প্রাইট, কোক আর বিয়ার দেয়া --- সবই রুমের সাথে ফ্রী।

আমাদের এই প্যাকেজে প্রতিদিন ৩ বেলা করে buffet দেয়া ছিল। ওদের ওয়েবসাইটে গেলে আরো বিভিন্ন অপশন পাওয়া যাবে।


 (পরবর্তী পর্বে সমাপ্য)

কোন মন্তব্য নেই: