মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০০৮

কেন লিখি?

ফোঁড়া কাটা সেই নাপিতের গল্পটা জানেন তো? ঐ যে, ডাক্তারদের ভাত মারতে বসেছিল ফসা ফস্ ফোঁড়া কেটে কেটে। তারপর শলাপরামর্শ করে নাপিতকে ডাক্তারিবিদ্যা শিখিয়ে দিল। কোথায় কোন শিরা, ধমনী; ভুলে কেটে গেলে বা ইনফেকশন হলে কী বিপদ হতে পারে জেনে এরপর তো নাপিত আর ক্ষুর দিয়ে ফোঁড়া কাটতে পারে না। এতে ডাক্তারদের আয় আবার স্থিতিশীল হওয়া ছাড়াও অনেকগুলি নিরাপরাধ ফোঁড়ার রোগী যে বিপদের আশংকা থেকে রক্ষা পেয়েছিল এটা নিশ্চয়ই বলার অবকাশ রাখে না।

দুইদিনের সন্যাসী ভাতকে অন্ন বললে সেটা মানুষ বাঁকা চোখে দেখবেই। কিন্তু কী করবো বলেন, ৪ বছর জাপানে থেকে আর সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, য্যুরিখ ইত্যাদি কিছুটা বেড়িয়ে এসে অনেক কিছুতেই গায়ে আগুন ধরানো জ্বালা হয়।

আমার হাতের ময়লা পকেটে ঢুকে যায় ডাস্টবিনের অপেক্ষায় আর পাশের এসি গাড়ির কাঁচ একটু নামিয়ে রাস্তাতে আইসক্রিমের কাগজ ফেলে -- কাঁহাতক ভাল লাগে?

রাস্তায় জ্যাম, ৪-ফেজের ট্রাফিক সিগনালেও ডানে মোড় নিতে পারে না রাস্তায় মানুষের জন্য। একদিন দাঁড়িয়ে দেখলাম ... ...... পথচারী পারাপারের জন্য একটা সময় সবুজ বাতিও আছে জেব্রাক্রসিং বরাবর। কিন্তু সবাই ব্যস্ত ... অত বাতি দেখার দরকার কী! ইচ্ছামত পার হবে। তাই যদি হয়, তাহলে শুধু শুধুই পথচারীদের জন্য বাতি লাগিয়েছে।

ইতর জ্যাম লাগে সবাই আগে যেতে চায় বলে, আর কেউই যেতে পারে না। তিন বা চারদিক থেকে সবাই একসাথে এগিয়ে এসে পেজগী লাগিয়ে দেয় .. ফলে কেউই যেতে পারে না। অথচ .. ধারাবাহিকভাবে সুশৃঙ্খল ভাবে গেলে হয়তো ১০ মিনিটের মধ্যে তাঁর যাওয়ার সুযোগ আসতো ... এখন ১ ঘন্টা বসে থাকো।

ট্রাফিক নিয়মগুলোতো শুধু বই ছাপানো আর লাইসেন্স পরীক্ষা নেয়ার জন্য বানানো হয়নি। ওগুলো মেনে চললেই অনেক চমৎকার চলা যায়। বিশ্বাস করেন না .... তবে শুনুন, মাঝে মাঝেই ঈদের আগে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রনের জন্য বি.ডি.আর নামে রাস্তায় ... তখন একই রাস্তা দিয়ে একই সংখ্যক গাড়ী, জ্যাম ছাড়াই কি সুন্দর চলে; ফলে বোঝা যায় যে রাস্তা কম বা ইত্যাদি অভিযোগ ধোপে টেকে না।

আরো বলবো .... নাহ্ থাক .... ..... দেখছেনই তো সব চারিদিকে।

যা হোক, দেশ ছেড়ে অন্য কোথাও থাকতে ভাল লাগে না। আবার, ওসব দেশের পরিবেশ প্রচন্ড ভাবে আকর্ষন করে। তাই সবাই যখন ভাবে - "আহা .. কবে ঐ দেশে যেতে পারবো, ঐ দেশের পাসপোর্ট হাতে পাবো", তখন আমার মাথায় ঘোরে - "আহা কবে ঐ দেশের মত সুন্দর দেশে পরিবর্তীত করতে পারবো, কবে অমন সুন্দর সভ্য হব।"

উপায় কী? ------ একটাই উপায় .... ... নাপিতকে ডাক্তারী শিখাতে হবে। সুতরাং যা জানি, ঝেড়ে ফেলি, লিখে ফেলি। দেখি নিরপরাধ দেশটাকে ইনফেকশন থেকে বাঁচানো যায় কি না।

এজন্য কলম দিয়ে (পড়ুন কীবোর্ড থেকে) সাহিত্য বের হয় না (ঐ পদের এন্টেনা বিল্ট-ইন নাই, ইনস্টলও করা হয় নাই) ... বের হয় নিরস সব পোস্ট। তবুও নাপিতে একটু ডাক্তারি শিখুক।


(সচলায়তনে প্রকাশিত)

কোন মন্তব্য নেই: