শুক্রবার, ১৮ মে, ২০০৭

এক্সাইটিং সময়!

ইদানিং ভীষন একটা এক্সাইটিং সময় পার করছি। এক্সাইটিংই বলা যায়। কারণ আমার থিসিস ডিফেন্স করার প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ চলছে। এপ্রিল মাসের শুরু থেকেই থিসিস আউটলাইন আর শিরোনাম নিয়ে একবার পরীক্ষকদের সামনে প্রেজেন্ট করতে হল। ওনারা আমার এ পর্যন্ত হওয়া সমস্ত প্রকাশনাগুলোর গুণগত মান পরীক্ষা করলেন। কোথায় প্রকাশিত হয়েছে তা পুঙখানুপুঙ্খরূপে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে রায় দিলেন .. হ্যাঁ এই ছাত্র ডিগ্রী আবেদন করতে পারে। এসকল শেষ করতে করতে মে মাস চলে আসল। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে জাপানে পরপর ৪ দিনের বিভিন্ন ছুটি থাকে; তার সাথে সপ্তাহান্তের দুদিন যোগ করে মোটামুটি টানা এক সপ্তাহ ছুটি পাওয়া যায়। এজন্য এ সময়টাকে গোল্ডেন উইক বলা হয়, সারাবছরে এত বড় ছুটি আর নেই। তাই সকলেই এই সময়ে বিভিন্ন রকম বেড়ানোর পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়িত করে। সমস্ত বেড়ানোর জায়গাগুলোতেও ব্যবসা হয় রমরমা। প্লেনের ও অন্যান্য যানবাহনের ভাড়াও সিজন হিসেবে বেশি থাকে। যাই হোক, এবছর আমারও কয়েকটা জায়গায় বেড়ানোর পরিকল্পনা ছিল। তাছাড়া জাপানে এটা আমার সম্ভবত শেষ বছর, বউও ফেরৎ চলে যাবে কয়েকদিন পরেই - ওর ভাইয়ের বিয়েতে অংশগ্রহন করে আমার আসার অপেক্ষা করবে বলে। কিন্তু ছুটি শুরুর ঠিক আগের দিন সন্ধ্যায় আমাকে জানানো হল যে থিসিসের একটা খসড়া জমা দিতে হবে। তাও আবার ঠিক চার দিন পরে, যেদিন বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে ঠিক সেদিন। পূর্ব পরিকল্পিত বেড়ানো কাট-ছাট করতে হল, কিন্তু পুরোপুরি বাদ দেয়া গেল না। দিনে বেড়িয়ে রাতে কাজ। রাত জেগে জেগে মোটামুটি দাঁড় করালাম থিসিসের ড্রাফট। কি যে লিখেছি নিজেই ঠিকমত জানিনা .... শুধু কোনরকমে জমা দেয়ার মত একটা কিছু প্রস্তুত করা।

ইতিমধ্যে চারজন পরীক্ষক ওটা দেখে উন্নয়নকল্পে বিভিন্ন রকম পরামর্শ দিয়েছেন। ওগুলো সমন্বয় করে তারপর আবার জমা দেয়ার মাঝখানে তিন সপ্তাহ সময়। এর মাঝেই ডিগ্রীর জন্য আবেদনপত্র জমা দিতে হল। সে আরেক ঝক্কি। সমস্ত ফরমগুলো জাপানিতে। ওগুলোর সফটকপি থেকে জাপানিগুলো কপি করে ইন্টারনেটের ট্রানস্লেশন সাইট থেকে কিছুটা ইংরেজি করে করে অর্থ বুঝার চেষ্টায় গেল দুই দিন। যা হোক আমার প্রফেসরের আন্তরিক সহায়তায় ওগুলো পূরণ করা গেল.... বেশিরভাগ কাজ প্রফেসরই করে দিলেন। এখন থিসিসটার পরবর্তী পর্যায়ের উন্নয়নমূলক কাজ করছি। এর পরে এটা চুড়ান্ত রূপে আসার আগে আরোও দুইবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা, পরামর্শ-উন্নয়ন হবে। আমন্ত্রিত এক্সামিনারগণ দেখবেন। তারপরে ফাইনাল ডিফেন্স।

আরো একটা ডিগ্রীর ছোঁয়া অনুভব করছি... তাই এ্যাত খাটুনির পরেও এক্সাইটেড লাগে। আশা করছি, এর ফলে ভবিষ্যত কর্মক্ষেত্রে কিছুটা সুবিধা পাব .... দেখা যাক।

কোন মন্তব্য নেই: