অবশেষে কম্পিউটার কিনলাম
আজ ১১ই ডিসেম্বর ২০০৭। গতকাল আমাদের বাসায় একটা নতুন কম্পিউটার কিনলাম।
আগের ল্যাপটপ কাহিনী:
গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে জাপান থেকে আনা আমার ল্যাপটপ কম্পিউরটারটার ডিসপ্লে নষ্ট হয়ে যায়। তারপরে বেশ কিছুদিন এর ওর কম্পিউটারের সি.আর.টি মনিটরের সাথে ল্যাপটপের সংযোগ দিয়ে ডিসপ্লে করিয়ে কাজ করেছি কয়েকবার। জরুরী কিছু ফাইল সিডিতে সংরক্ষণ করেছি। আর একজন সহকর্মীর পোর্টেবল হার্ডডিস্কে কিছু ব্যাকআপ রেখেছি। তারপর গতমাসে ল্যাপটপটির মনিটর/ডিসপ্লে ঠিক করার জন্য মেরামতের দোকানে দিয়েছিলাম। ওরা তো ঠিক করতে পারেইনি বরং এখন ল্যাপটপ অন করলেও সেটি চালু হয় না। শুরুতে যেটা ছিল মনিটরের ডিসপ্লে কন্ট্রোলকারী চিপের সমস্যা সেটি এখন মাদারবোর্ডের ইনপুট-আউটপুট চিপের সমস্যায় পরিণত হয়েছে। NEC ব্রান্ডের আমার ল্যাপটপের সমতুল্য কোন মডেল বাংলাদেশে এখনও বানিজ্যিকভাবে আসেনি, তাই এর সাথে মানানসই (compatible) চিপ আছে কি না এ বিষয়েও মেরামতকারী নিশ্চিত নয়। অন্য একটি সার্বজনিন চিপ লাগিয়ে দিতে পারবেন তবে সেটার কোন গ্যারান্টি দিতে পারবেন না।
কম্পিউটারের প্রকট অভাব:
আমার অফিসে চমৎকার ইন্টারনেট সংযোগ সহ একটা ডেস্কটপ কম্পিউটার পাই আমি। সুতরাং ব্রাউজিং, ইমেইল সহ কম্পিউটারের যাবতীয় কাজ ওখানেই করে ফেলতে পারি। তবে কিছু কিছু কাজ, যেমন - লেখালেখি .. .. ওভাবে করে অভ্যস্থ নই। কারণ কাজগুলি প্রচুর সময় নেয় এবং এজন্য মাথা থেকে অন্য চিন্তা বের করে দিয়ে স্থিরচিত্তে কাজ করতে হয়। অফিসে (একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়) সেটি করার কোন উপায় নেই কারণ, বাসা থেকে একের পর এক অভিযোগের ফোন আসতে থাকে। সুতরাং কাজগুলি বাসায় বসে করাটাই সমাধান। কম্পিউটারের অভাবে সেই ধরণের কোন কাজ করতে পারছিলাম না মোটেই। এ তো গেল আমার কথা ... এবার আসি বউয়ের কথায়: বুয়েটের ওয়াটার রিসোর্সে মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি হয়েছে, ইতিমধ্যে ক্লাস শুরু হয়ে এসাইনমেন্ট দেয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। কাজেই ওসব কাজ করার জন্য কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট থাকা অত্যাবশ্যক। সুতরাং বাসায় একটা কম্পিউটারের ব্যবস্থা না করে আর উপায় ছিল না।
কম্পিউটারে কী আছে:
খুবই সাধারণ একটা কম্পিউটার কিনলাম। কারণ বাসায় আমরা কেউই গেমার নই। সিনেমা দেখা বা গান শোনাও তেমন একটা হবে না বলেই আমার বিশ্বাস ... কারণ ওসবের পরিপূরক টেলিভিশন ও কেবল সংযোগ আছে। এছাড়া এম.পি.থ্রি সহ অন্যান্য সাধারণ ফরম্যাটের গান বাজানোর উপযোগী সিডি প্লেয়ারও বাসায় আছে। সুতরাং আমার বিবেচনায় শুধু লেখালেখি, হিসাব নিকাশ, প্রেজেন্টেশন, ইন্টারনেট ব্যবহার, কিছু ইঞ্জিনিয়ারিং সফটওয়্যার এবং সীমিত কিছু ছবি/গ্রাফিক্স সফটওয়্যার ব্যবহারের মধ্যেই আমাদের কম্পিউটারের ব্যবহার সীমাবদ্ধ থাকবে।
হার্ডওয়্যার: তাই আর আকাশচুম্বী দামের কোর-টু-ডুয়ো বা ওই মাত্রার কোন প্রসেসরের পেছনে না দৌড়িয়ে সেলেরন প্রসেসর (৩.০ গিগা) নিলাম। RAM ৫১২ মেগাবাইট। ইন্টেলের ৯১৫ চিপসেটসহ ইন্টেল মাদারবোর্ড। ৮০ গিগা সাটা হার্ডডিস্ক। ১৫ ইঞ্চি LG Flatron এল.সি.ডি মনিটর। অপটিকাল ড্রাইভ আপাতত নাই, কারণ আমার নষ্ট/অকার্যকর ল্যাপটপের চমৎকার ডিভিডি রাইটারসহ ড্রাইভটাকে ইউ.এস.বি. ড্রাইভ হিসেবে রূপান্তরিত করছি। এছাড়া ল্যাপটপের হার্ডডিস্কটাকেও পোর্টেবল ইউ.এস.বি. হার্ডডিস্কে রূপান্তরিত করব, ফলে ওটা ব্যাকআপ হার্ডডিস্ক হিসেবে কাজ করবে। কিবোর্ড আর অপটিকাল মাউসের কথা নাই বা বললাম। এছাড়াও ৬০০VA ক্ষমতার একটা ইউ.পি.এস কিনেছি। সবমিলিয়ে দাম পড়ল বত্রিশ হাজার টাকা। এছাড়াও অপটিকাল ড্রাইভ এবং হার্ডডিস্ক রূপান্তরে আরও আড়াইহাজার টাকার মত খরচ হবে বলে শুনেছি।
সফটওয়্যার: আপাতত পাইরেটেড এক্স.পি. দিয়ে চলছে। সাথে অফিসটাও পাইরেটেড। সম্ভবত ম্যাকাফিটাও ক্র্যাক করা। বাকী সবই ফ্রীওয়্যার। ক্যাডের কাজ করার জন্য প্রোজক্যাড নামক ফ্রীওয়্যার, বাংলার জন্য অভ্র, পিডিএফ রিডার হিসেবে ফক্সইট আর মেসেঞ্জার হিসেবে পিজিন ইতিমধ্যেই ইনস্টল করেছি। সামনে ইনস্টলের তালিকায় আছে ওপেনঅফিস, পিডিএফ রাইটার, ফ্রী-ডাউনলোড-ম্যানেজার, ফায়ারফক্স, GIMP, কোন একটা ফ্রী-এন্টিভাইরাস, IrfanView ইমেজ ভিউয়ার ইত্যাদি। এছাড়া ডুয়েল বুটিং অপশনসহ উবুন্টু/কুবুন্টু লিনাক্স থাকবে অতিশীঘ্র।
২টি মন্তব্য:
খুব ভাল করেছেন হাবিজাবি কনফিগারেশানের কম্প্যু না কিনে। আমাদের দেশের মানুষদের এই একটা সমস্যা, নিজেদের প্রয়োজনটা ডিফাইন করতে পারে না। হয়তো এক্সেল আর ওয়ার্ডে কাজ করবে শুধু, কিন্তু কিনে বসে গ্রাফিক্স প্রো-দের কম্প্যু।
আপনার চুরি হওয়া জিনিসগুলো পেয়েছেন খুঁজে?
সচলেও দেখি না তেমন, চলে আসেন আড্ডা দিতে।
আমরা কিন্তু একবারও বলি নাই যে নতুন কম্পু কেনার জন্য আমাদের খাওয়াতে হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন