একটা দাপ্তরিক চিঠি (প্রেমপত্র নয়)
বেশ কিছুদিন আগে একটা বিষয় পড়াতে গিয়ে আবিষ্কার করলাম যে বিভিন্ন স্তরের পেশাদারগণের সাথে কার্যকর যোগাযোগের মাধ্যম ভিন্ন (…. নিজে ঐ বিষয় পড়ার সময় বই খুলে দেখিনাই … আর পড়াইতে গিয়ে আবিষ্কার!)। সেখানে দেখলাম যে টপ লেভেলের প্রফেশনালগণের জন্য নিউজলেটার টাইপের জিনিষগুলো বেশি কার্যকর যোগাযোগ মাধ্যম। এটা পড়ে মাথায় পোকাটা নড়েচড়ে বসলো ….. আচ্ছা ... এই কথা, ঠিক আছে প্রয়োগ করে দেখি। আমাদের ভিসি স্যার এবং অন্য বিভাগগুলোর প্রধানকে একটা বিরাট পত্রাঘাত (ইমেইল) করে বসলাম। আশ্চর্যজনক ভাবে চিঠিটাকে সফল বলতে হচ্ছে …. মূল মেইলটা ইংরেজিতে (গুছিয়ে লিখতে আমার ৬ ঘন্টার মত লেগেছিলো!!), এখানে চিঠিটার অনুবাদ প্রকাশ করলাম – বলা যায় না, কারো কাজে লাগতে পারে; আবার এখানেই ঐ লেভেলের পাঠক থাকলে প্রভাবিত হয়ে যেতে পারে ;) ।
-------
তারিখ: ১০-জানুয়ারী-২০০৯
বিষয়: Some notes on present computing practices in this university
প্রিয় মহোদয়,
আপনার ব্যস্ত সময় থেকে আমার এই পত্রটি পড়ার জন্য সামান্য কিছু সময় প্রার্থনা করছি।
বিবর্ণ অতীত (Gloomy background)
অন্য প্রায় সবগুলি প্রতিষ্ঠানের মত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ও প্রাত্যহিক কাজকর্ম এবং শিক্ষাদানের জন্য অবৈধ (pirated) সফটওয়্যার ব্যবহার করে। জরূরী সফটওয়্যারগুলোর অতি উচ্চ মূল্য (উইন্ডোজ = ৫০ ইউ.এস.ডলার/পিসি; এম.এস.অফিস = ২৫০ ইউ.এস.ডি; অটোক্যাড = ৬০০ ইউ.এস.ডি. ইত্যাদি) বিবেচনা করলে, অতি প্রয়োজনীয় কম্পিউটিং চাহিদা মেটাতে এটাই একমাত্র বাস্তবসম্মত উপায় বলে মনে হয়। এইসকল সফটওয়্যারের স্বত্বাধীকারী প্রতিষ্ঠানগুলি এই মুহুর্তে আমাদের বিরূদ্ধে কোনরকম আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না, কিন্তু এরকম অবস্থা চলতে থাকলে নিকট ভবিষ্যতে আমাদেরকে অর্থনৈতীক জরিমানার ঝড়ো হাওয়া এবং দূর্নামের সম্মুখীন হতে পারে।
এখন মনে হচ্ছে যে সফটওয়্যার লাইসেন্সের জন্য নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ করা ছাড়া আর কোন উপায় নাই; অবশ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বলে হ্রাসকৃত/ভর্তূকী মূল্যে এগুলো পাওয়ার সম্ভাবনা আছে (কারণঃ নিসন্দেহে আমরা ঐ সফটওয়্যারগুলোর আরো ভবিষ্যত ক্রেতা তৈরী করছি)। কিন্তু গত কয়েকবছরে খুব দ্রুতই অনেক ঘটনা ঘটে গেছে এবং আশ্চর্যজনকভাবে এখন বিনামূল্যেই এ অবস্থার বিকল্প ব্যবস্থা আছে। প্রায় সবগুলি প্রোপাইটারি সফটওয়্যারেরই একটা বিনামূল্যের বিকল্প (free alternative) আছে। কোনো কোনো লোক ভাবেন যে বিনামূল্যের সফটওয়্যারগুলি মোটেও ব্যবহারযোগ্য নয় এবং খুব কম বৈশিষ্ট্য (feature) সম্পন্ন – কিন্তু বাস্তবতা সম্পুর্ন উল্টা, কিছু ফ্রী-সফটওয়্যারগুলো আমাদের অভ্যস্থ্ সফটওয়্যারগুলোকেও ছাড়িয়ে গেছে।
আমি বিখ্যাত সান মাইক্রোসিস্টেম কর্তৃক তৈরী মাইক্রোসফট অফিসের বিনামূল্যের বিকল্প ওপেনঅফিস.অর্গ ব্যবহার করছি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই সফটওয়্যারটিকে আমার বেশি ভালো মনে হয়েছে; যেমন: বিবলিওগ্রাফী বা রেফারেন্স তৈরীর ক্ষেত্রে এবং পি.ডি.এফ. ফাইল বানানোর নিজস্ব ক্ষমতার ক্ষেত্রে। আমি অফিসের সমস্ত কাজেই (মেমো, প্রশ্নপত্র, ক্লাস লেকচার, টেবুলেশন) এই সফটওয়্যারটা ব্যবহার করছি। GIMP হলো আরেকটি দারুন সফটওয়্যার যেটা দিয়ে দামী ফটোশপে করা আমাদের কাজগুলোর সবই করা যায়। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীগণ দামী ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের বদলে বিনামূল্যের ফায়ারফক্স বা অপেরা ব্যবহার করে অধিকতর গতি এবং নিরাপত্তা পাচ্ছেন। এই তালিকাটা অনেক লম্বা এবং ক্রমবর্ধমান।
এগুলো চালানোর জন্যও আমাদের উইন্ডোজ ব্যবহার করতে হবে, এবং যদি সফটওয়্যার পাইরেসী/চুরি এড়াতে চাই তাহলে প্রতি কম্পিউটারে এজন্য ৫০ ডলার খরচ বাড়বে। অবশ্য ভর্তূকী মূল্য পেলে আরও কমে পেতে পারি। এছাড়া এই অপারেটিং সিস্টেমের ভাইরাস এবং সিকিউরিটি জনিত সমস্যা দুর করার জন্য আমাদের ঝামেলা/খরচ এড়ানোর কোন উপায় নাই।
আছে আশার প্রদীপ (There is hope)
বেশিরভাগ লিনাক্স ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেমগুলো বিনামূল্য পাওয়া যায় এবং এগুলোতে প্রয়োজনীয় সবগুলি সফটওয়্যার অপারিটিং সিস্টমের সাথেই একসাথে দেয়া থাকে। এছাড়া লিনাক্স সিস্টেমগুলির নিরাপত্তা অত্যন্ত উচ্চমানের আর সিস্টেমগুলো খুবই আস্থাজনক/স্টেবল; এগুলোর ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় অসম্ভব। গত কয়েকবছর ধরে লিনাক্সের উন্নয়নকারীগণ উইন্ডোজ এক্স.পি/ভিস্তার মত পুরাপুরি গ্রাফিকাল এবং ব্যবহারবান্ধব অপারিটিং সিস্টেম বানাচ্ছেন। কাজেই এই অপারেটিং সিস্টেমগুলো পাইরেসী জনিত কারণে যে মহাবিপদ ঘটতে পারে তার সবগুলো ক্ষেত্রেই (খরচ, নিরাপত্তা, নির্ভরতা এবং ব্যবহারযোগ্যতা) আমাদেরকে রক্ষা করতে পারে।
তাছাড়া, লিনাক্সের সমস্ত সফটওয়্যারগুলোই মুক্তসোর্স – এর অর্থ হল, যে কোনো আগ্রহী ব্যক্তি এগুলোর প্রোগ্রামের সোর্সকোডগুলো ডাউনলোড করতে এবং দেখতে পারবেন। প্রোপাইটারী সফটওয়্যারগুলো এই সুবিধা দেয় না ফলে আগ্রহী শিক্ষার্থীগণ এগুলোর কোড দেখে কোনো কিছু শিখতে পারে না।
মজার ব্যাপার হল, আমাদের বেশিরভাগ লোকই না জেনে প্রতিদিন লিনাক্স ব্যবহার করছি। কারণ প্রায় সবগুলো গ্যাজেট যথা: পি.ডি.এ., মোবাইল ফোন, ডিজিটাল ডিকশনারি ইত্যাদি লিনাক্সে চলে। তাছাড়া, পৃথিবীর বেশিরভাগ ইন্টারনেট সার্ভার এবং সুপার কম্পিউটার লিনাক্সে বা ইউনিক্সে (লিনাক্সের বাবা) চলে।
ইউরোপ এবং আমেরিকার নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিরাপত্তা এবং সাশ্রয়ের জন্য লিনাক্স ব্যবহার করে (তথ্যসূত্র: http://www.linux.org/info/linux_govt.html)। ভারতের প্রতিষ্ঠানগুলোতেও লিনাক্স একটি অতি পরিচিত নাম। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাতিষ্ঠানিকভাবে লিনাক্স ব্যবহার করে। আর, আমি যতদুর জানি, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ও লিনাক্সের পরিবর্তিত হওয়ার পথে আছে।
সমস্যাসমূহ (The obstacles)
ইদানিং তরুণ সম্প্রদায় ধীরে ধীরে লিনাক্সের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে। কিন্তু কোন প্রতিষ্ঠানে এটা চালু করার ক্ষমতা/অধিকার তাঁদের নেই। কম্পিউটার সায়েন্স বা ইলেক্ট্রিকাল/ইলেক্ট্রনিক্স বিভাগের অপেক্ষাকৃত বয়োজেষ্ঠ শিক্ষকগণও লিনাক্সের নিরাপত্তা এবং নির্ভারতা (security and stability) সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখেন। কিন্তু তাঁরা বর্তমানে লিনাক্সের অগ্রগতি সম্পর্কে এবং আধুনিক লিনাক্স ডেস্কটপ সিস্টেমগুলোর ব্যবহার বান্ধবতা সম্পর্কে মোটেও জানেন না। এছাড়া নেটওয়র্ক এডমিনিস্ট্রেটরগণও তাদের সার্ভারে ঐসকল লিনাক্স সিস্টেমের সার্ভার ভার্সান নিয়ে কাজ করেন - তাই তাঁরাও এগুলো সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য কতটুকু ব্যবহারবান্ধব তা জানেন না।
কাজেই শীর্ষ কর্তাব্যক্তিদের মনে লিনাক্স সম্পর্কে একটা পুরাতন ধ্যাণ ধারণা রয়ে গেছে (লিনাক্স হলো প্রস্তরযুগের কালো স্ক্রীনে কমান্ড লাইনে কাজ করতে হয় - এমন একটা সিস্টেম)। তাই তাঁরা এটার নিরাপত্তা, নির্ভারতা এবং সাশ্রয়ী বৈশিষ্ট জানার পরেও সাধারণ ব্যবহারকারীদেরকে লিনাক্স দিতে দ্বিধা বোধ করেন এবং আধুনিক লিনাক্সের সুবিধা থেকে সকলকে বঞ্চিত করেন।
পরিকল্পনা (The Plan)
কর্তৃপক্ষের টেকনিক্যাল কর্মকর্তাগণকে লিনাক্সের সর্বশেষ বৈশিষ্ট সম্পর্কে জানানো হোক (যে জন্য আমি বিজ্ঞাপন দিচ্ছি!) এবং তারপর তাঁরা সাধারণের জন্য লিনাক্স দেয়া যাবে কি না সেটা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিক (whether or not to give it a try)। কর্তৃপক্ষের জন্য এজন্য এক বা একাধিক প্রেজেন্টেশনের আয়োজন করা যেতে পারে, যেখানে আমার চেনা লিনাক্সে দক্ষ স্বেচ্ছাসেবকগণ শুধুমাত্র বিস্তারিত টেকনিকাল বিষয়াদি উপস্থাপন করবেন। স্বেচ্ছাসেবক লিনাক্স গুরুগণ কোনরকম টাকাপয়সা না নিয়েই এই কাজটা করে দেবেন (এবং দেশের জন্য কিছু করছেন জেনে সন্তুষ্ট থাকবেন।)।
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখা ভাল যে, জনাব রায়হান চৌধুরী (আমাদের ডেটাবেসের যাদুকর) লিনাক্স ডেস্কটপ অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে ইতিমধ্যেই বেশ ভাল জানেন। গত ২১শে নভেম্বর ২০০৮ তারিখে সাধারণ ছাত্র এবং আগ্রহীদের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়েই একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল (অনুমতি দেয়ার জন্য ধন্যবাদ)। অনুষ্ঠানের উপরে একটা প্রতিবেদন এখানে পাওয়া যাবে (http://forum.amaderprojukti.com/viewtopic.php?t=2569&f=42)
ছাত্রদের জন্য যেসকল কম্পিউটার আছে সেগুলোর কয়েকটিতে লিনাক্স দেয়া উচিত, যাতে করে এ বিষয়ে তাঁদের জানার একটা সুযোগ ঘটে।
প্রধান ল্যাবে আমাদের এখনও উইন্ডোজের দরকার আছে, কারণ আমাদের শিক্ষা কার্যক্রমে কিছু সফটওয়্যারের ব্যবহার শেখানো হয় যেগুলো উইন্ডোজে চলে (আমরা সবই পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করি!!)। এই কম্পিউটারগুলোতে আমরা অন্য কাজকর্মের জন্য মুক্তসোর্স সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারি।
নতুন ছোট কম্পিউটার ল্যাবরেটরিটাতে কম্পিউটারগুলোতে ডুয়্যাল বুটিং করতে পারি। কাজেই ছাত্ররা একটা অজানা অপারেটিং সিস্টেম দেখতে পারবে।
লাইব্রেরীর সমস্ত কম্পিউটারগুলোই লিনাক্সে নেয়া সম্ভব। ঐ কম্পিউটারগুলো ইন্টারনেট ব্রাউজ করার জন্য ব্যবহৃত হয়, তাই লিনাক্সই সবচেয়ে উপযুক্ত। আমাদের সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেটরদের সাথে আমি এই বিষয়ে আলাপ করেচিলাম - তাঁরাও এই ব্যাপারে একমত। সম্ভবত, এই কাজ করার জন্য তাদের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সবুজ সংকেত দরকার। লিনাক্স ব্যবহারকারীদের স্বেচ্ছাসেবক গ্রুপও এই কাজে বিনামূল্যে সাহায্য করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছে - কারণ এতে তাঁরা বলতে পারবে যে "আমরা প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটিকে পাইরেসীমুক্ত হতে সাহায্য করেছি"।
ছাত্রদেরকে এই নতুন কিন্তু অধিকতর ভালো কম্পিউটিং সম্পর্কে সাহায্য করার জন্য কম্পিউটার ক্লাবের মত একটা ছাত্র সংগঠন দরকার। বিভিন্ন সময়ে আমি আমাদের সিস্টেম এডমিনিস্ট্রেটর এবং আমাদের ডীন স্যারের (প্রফেসর তপন কুমার চক্রবর্তী) সাথে এ বিষয়ে আলাপ করেছি। ওনারা উভয়েই একটি সমস্যার কথা জানিয়েছেন - এই ধরণের কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয় টাকা। একটা সম্ভাব্য সমাধান হল ছাত্রদের ভর্তি ফী থেকে ২০/- টাকা করে এই খাতে নিয়ে আসা -- আমার ধারণা এইটুকুই এর কার্যক্রম চালানোর জন্য যথেষ্ট হবে। ECE বিভাগের কোন একজন শিক্ষক এই ক্লাবের মডারেটর হলে ভাল হয়। আমি ওনাদের সকলকে ভালভাবে চিনি না কিন্তু গাজী (প্রভাষক, ECE) এই মুক্তসোর্স/লিনাক্স বিষয়ে যথেষ্ট আগ্রহী মনে হল (আমরা রাতে একসাথে অফিসের গাড়িতে বাসায় ফিরি)।
সম্ভাব্য ফলাফল (Probable outcomes)
সর্বাগ্রে, পাইরেসী এড়ানোর পদক্ষেপের ফলে ভবিষ্যতে জরিমানা, দূর্নাম এবং ঐ সংক্রান্ত ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে বা থাকবে না।
লিনাক্স ব্যবহারের অভিজ্ঞতা আমাদের গ্রাজুয়েটদের চাকুরীর ক্ষেত্রকে প্রসারিত করবে।
এরকম পদক্ষেপের ফলে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির নাম কিছু বিশেষ মহলে ছড়িয়ে পড়বে। আমার ধারণা এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতি বাড়িয়ে দেবে। গত লিনাক্স বিষয়ক অনুষ্ঠানে (২১-নভেম্বর) প্রায় ১৩০ জন অংশগ্রহণ করেছিলো (ছবি: http://gallery.linux.org.bd/thumbnails.php?album=36)।
এসবের মধ্যে আমি কেন! (Why I am involved! )
একজন ব্যবহারকারী হিসেবে আমি পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করে সবসময়ই লজ্জিত থাকতাম। একমাত্র যে উপায় আমার জানা ছিল সেটা হল এই সফটওয়্যারগুলোর মূল্য পরিশোধ করতে হবে - আমি ঠিক করেছিলাম যে যখনই আমার সামর্থ হবে আমি এগুলো কিনে ব্যবহার করবো। কিন্তু পরবর্তীতে যখন আমি জাপানে, আমার ল্যাবরেটরিতে জাপানি কম্পিউটার নিয়ে হয়রান হয়ে খোঁজাখুঁজি করতে গিয়ে ওপেনসোর্স সফটওয়্যারের সন্ধান পাই এবং খুব দ্রুতই উচ্ছসিত হয়ে পড়ি। গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে আমি আমার বাসায় কম্পিটারের সমস্ত কাজ লিনাক্সে করছি।
পাইরেসি এড়িয়ে চলার ফলে নৈতীক ভাবে শক্তিশালী হয়েছি এবং অন্যদেরকেও এই রাস্তা দেখাতে ইচ্ছুক। এছাড়া অন্যরাও ভাইরাসমুক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের অভিজ্ঞতা লাভ করুক এটাও কাম্য। এমনকি প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটিতেও আমি লিনাক্স ব্যবহার করছি। আমার কিছু সহকর্মী এটার ব্যবহারবান্ধবতা দেখে এবং ভাইরাসমুক্ততা দেখে নিজেদের জন্য্ সংগ্রহ করেছেন।
আমি এই বিষয়ে ECE এবং IT service এর শিক্ষক ও অন্যদের সাথে কথা বলেছি। তাঁদেরকে আগ্রহী মনে হলেও এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য কেউ নেই। এর ফলে আপনাকে এই প্রসঙ্গে বাস্তব পদক্ষেপ নেয়ার বিষয় জানানোর দায়িত্বটা আমার ঘাড়েই এসে পড়লো।
আমার এই দীর্ঘ মেইল পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আশা করি, যে কোন রকমের অসুবিধা সৃষ্টি করে থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
ধন্যবাদান্তে .....
----------
এই উত্তরে ভিসি স্যার একলাইন লিখেছিলেন: we will look into this matter.
চিঠিটাকে সফল এজন্য বলছি যে ইতিমধ্যেই প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরীর সমস্ত কম্পিউটার উবুন্টু লিনাক্সে চলছে। বেশ লম্বা প্রস্তুতি শেষে এডমিন সেকশন এই মাসেই লিনাক্সে কনভার্ট হবে বলে শুনেছি। আমি ছাড়াও এই ইউনিভার্সিটির আরো কয়েকজন (ভিসি স্যার সহ) কোনো না কোনো কম্পিউটারে নিয়মিত লিনাক্স ব্যবহার করেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন