শুক্রবার, ২০ মে, ২০১১

পৃথিবীতে কারা কারা লিনাক্স ব্যবহার করেন

লিনাক্স যদিও মূলধারার অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে বেশ নতুন, তবুই ইতিমধ্যেই অনেক রকম পরিবেশেই এটা ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে সরকারী প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাসা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠান।

সরকার

বিভিন্ন দেশের স্থানীয় সরকারগুলো বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার মত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছ থেকে অনবরত মেধাস্বত্ব রক্ষার ব্যাপারে চাপের মধ্যে থাকে। এই চাপ এড়াতে অনেক স্থানীয় সরকারই লিনাক্স এবং অন্যান্য ফ্রী সফটওয়্যার ব্যবহারের দিকে ঝুঁকেছে, কারণ এগুলো তাদের ক্ষমতার মধ্যে থেকেই মাইক্রোসফট, অ্যাপেল বা অন্য কোম্পানিগুলোর দামী কিংবা ক্র্যাকড সফটওয়্যারের আইনসঙ্গত বিকল্প। লিনাক্সের প্রসারের ফলে এই উন্নত দেশগুলোর সরকারী কাজের জন্য স্বল্পোন্নত দেশের কম্পিউটারে দক্ষ মানবসম্পদ দ্বারা কাজ পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। অনেক দামী সফটওয়্যার ছাড়া এমন অন্য কোন বিকল্প না থাকলে তাদের পক্ষে এমন কাজ করা কখনই সম্ভব হত না।

  • ব্রাজিলের পিসি কানেক্টাডো প্রোগ্রাম লিনাক্সে চলে। এটা ২০০৩ সাল থেকে ব্রাজিলের সরকারী প্রোগ্রাম। এতে ফেডোরা নির্ভর  অপারেটিং সিস্টেম সহ কম্পিউটারে ট্যাক্স মওকুফ পাওয়া যায়। এখানকার কম্পিউটারগুলো সব ১২৮ বা ২৫৬ মেগাবাইট মেমরিতে সেলেরন ভিত্তিক প্রসেসরে ৪০ বা ৮০গিগাবাইট হার্ডডিস্ক সহ পাওয়া যায়। এই প্রজেক্টের শুরুতে মাইক্রোসফট কমদামে তাদের এক্সপি স্টার্টার এডিশন দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু সেই উপায়ে মারাত্নক রকম সীমাবদ্ধতা থাকায় সরকার সেটা গ্রহণ করেনি। মুক্ত সফটওয়্যারে ইঙ্কস্কেপ, গিম্প, ওপেন অফিস ও আমারক এখানে বহুল ব্যবহৃত।
  • মিউনিখ শহরে ২০০৩ সালে এর ১৪,০০০ ডেস্কটপ কম্পিউটারে ডেবিয়ান নির্ভর LiMux ব্যবহার করা শুরু করার উদ্যোগ নেয়। তবে ২০১০ পর্যন্ত এই লক্ষ্যমাত্রার ২০% অর্জন করেছে।
  • যুক্তরাস্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর (United States Department of Defense) লিনাক্স ব্যবহার করে। আমেরিকান আর্মি রেড হ্যাট লিনাক্সের সবচেয়ে বড় গ্রাহক। এছাড়া আমেরিকার নৌবাহিনীর পারমানবিক সাবমেরিনগুলো লিনাক্স ব্যবহার করে।
  • ভিয়েনা শহর কর্তৃপক্ষ এর পিসিগুলোকে ডেবিয়ান নির্ভর উইয়েনাক্সে (wienux) নিয়ে যেতে চেয়েছিলো। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তদের প্রয়োজনীয় কাস্টমাইজড সফটওয়্যারের উপযুক্ত লিনাক্স বিকল্পের অভাবে এই পরিকল্পনা ত্যাগ করা হয়।
  • ২০০৩ সালে স্পেনকে লিনাক্স গ্রহণে সবচেয়ে অগ্রবর্তী ছিল। তাঁদের এক্সট্রিমাদুরা (Extremadura) প্রদেশে সরকারী উদ্যোগে এজন্য LinEx নামক ডিস্ট্রিবিউশন তৈরী করা হয়। তাঁরা পত্রিকার সাথে ২ লক্ষ লিনাক্স সিডি বিতরণ করে এবং আরো ৭০ হাজার কপি ডাউনলোড করা হয়। ঐ প্রদেশের শতকরা ১০ ভাগ লোক লিনাক্স ব্যবহার করে।
  • চীন সরকারের ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক অব চায়না (ICBC) এর ২০,০০০ শাখায় ওয়েব সার্ভার এবং নতুন টার্মিনাল প্লাটফর্মে লিনাক্স ইনস্টল করছে (২০০৫ সালের খবর)।
  • ২০০৬ সালের এপ্রিল মাসে আমেরিকার ফেডারেল এভিয়েশন প্রশাসন রেড হ্যাট এন্টারপ্রাইজ লিনাক্সে চলে আসা সম্পন্ন করার ঘোষনা দেয়। এতে তাদের পরিকল্পিত সময়ের তিন ভাগের এক ভাগ সময়ে সম্পন্ন হয় আর এতে তাঁদের ১৫ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হয়।
  • ২০০২ সালে পাকিস্থান সরকার টেকনোলজি রিসোর্স মবিলাইজেশন ইউনিট গঠন করে, যাতে পেশাদার ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের মুক্ত সফটওয়্যার ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। লিনাক্স এতে একটা বিকল্প হিসেবে ছিল। পাকিস্থানের সরকারী স্কুল এবং কলেজে মুক্ত সফটওয়্যার ব্যবহৃত হয় এবং তারা আশা করছে যে  খুব শীঘ্রই তাদের সমস্ত সরকারী সেবা লিনাক্সের মাধ্যমে দেবে।
  • ফরাসী পার্লামেন্ট তাদের ডেস্কটপ পিসিগুলোতে উবুন্টু ব্যবহার করছে।
  • জার্মানীর ফেডারেল কর্মসংস্থান অফিস (Bundesagentur für Arbeit) তাদের ১৩,০০০ কম্পিউটার ওয়র্কস্টেশন উইন্ডোজ এনটি থেকে ওপেনসুযেতে নিয়ে এসেছে। (ওপেনসুযে একটি জনপ্রিয় লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশন)
  • চেক প্রজাতন্ত্রের পোস্টাল সার্ভিস তাদের ৪০০০ সার্ভার এবং ১২,০০০ ক্লায়েন্টকে নভেল লিনাক্সে নিয়ে এসেছে ২০০৫ সালে।
  • জার্মানীর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর ১১,০০০ ডেস্কটপগুলোকে লিনাক্স এবং অন্য মুক্ত সফটওয়্যারে নিয়ে আসা শুরু করেছে। ২০০১ সালে সার্ভারগুলোকে আর ২০০৫ সালে ডেস্কটপগুলোকে, আর সবগুলো ল্যাপটপেই ডেবিয়ান লিনাক্স চলে। ২০১১ সালে তারা আবার মাইক্রোসফট অফিস, আউটলুক এবং উইন্ডোজে ফিরে যাওয়ার ঘো‌‌ষনা দিয়েছে; কারণ হিসেবে হার্ডওয়্যার চালনায় অসুবিধার অযুহাত দেখিয়েছে, তবে এর পেছনে মাইক্রোসফটের দেয়া প্রণোদনাও (incentive) ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
  • কিউবার ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন সায়েন্স-এর ছাত্ররা 'নোভা' নামে নিজেদের লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশন চালু করেছিল। এটা দিয়ে তার সরকারী এবং ব্যক্তিগত কম্পিউটার থেকে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ প্রতিস্থাপন করতে চায়; আর এই প্রজেক্টটা এখন সরকারী সমর্থন পেয়েছে। ২০১১ সালের শুরুতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০০০ পিসিতে এই নতুন অপারেটিং সিস্টেমে চালানোর ঘোষনা দেয়া হয়।
  • ক্যান্টন অব সোলথুর্ন নামক সুইজারল্যান্ডের অঙ্গরাজ্য ২০০১ সালে এর কম্পিউটারগুলো লিনাক্সে চলে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু ২০১০ সালে সুইস প্রশাসন পুরা উল্টা ঘুরে ডেস্কটপগুলোতে উইন্ডোজ-৭ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
  • ফ্রান্সের জাতীয় পুলিশ বাহিনী এর ৯০,০০০ ডেস্কটপগুলোকে উইন্ডোজ এক্সপি থেকে উবুন্টুতে নেয়া শুরু করে ২০০৭এ। কারণ এতে উইন্ডোজ ভিসতার জন্য যে প্রশিক্ষণ লাগবে তার চেয়ে কম প্রশিক্ষণ লাগবে। এই প্রতিস্থাপন ২০১৫ সাল নাগাদ শেষ হবে; ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত এভাবে সফটওয়্যার লাইসেন্স বাবদ ৫০ মিলিয়ন ইউরো সাশ্রয় হয়েছে।
  • ফ্রান্সের কৃষি মন্ত্রণালয় ম্যানড্রিভা লিনাক্স ব্যবহার করে।
  • মেসিডোনিয়ার বিজ্ঞান ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় ক্লাসে ১,৮০,০০০ এরও বেশি উবুন্টু নির্ভর ডেস্কটপ ব্যবহার করছে এবং প্রতি ছাত্রকেই উবুন্টু ওয়র্কস্টেশন ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ করছে।
  • প্রযুক্তিগত স্বাধীনতার লক্ষ্যে চীন সেদেশের Loongson প্রসেসর পরিবারের জন্য অপারেটিং সিস্টেমে শুধুমাত্র লিনাক্স ব্যবহার করে।
  • আমেরিকার পারমানবিক নিরাপত্তা প্রশাসন বিশ্বের তৃতীয় দ্রুততম সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করে, এটার নাম আইবিএম রোডরানার – যা ফেডোরা এবং রেড হ্যাট এন্টারপ্রাইজ লিনাক্স ব্যবহার করে চলে।
  • ২০০৪ সালে স্পেনের অ্যান্ডালুসিয়া অঞ্চলের স্বায়ত্বশাসিত সরকার Gaudalinex নামে তাদের নিজস্ব লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশন তৈরী করে নিয়েছে।
  • দক্ষিন আফ্রিকান সামাজিক নিরাপত্তা সোসাইটি মাল্টি স্টেশন লিনাক্স ডেস্কটপ ব্যবহার করে তাদের ৫০টি প্রত্যন্ত এলাকার বাজেট এবং অবকাঠামোগত অসুবিধা মোকাবেলা করছে।
  • ২০০৩ সালে তুরস্কের সরকার তাদের নিজস্ব লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশন তৈরীর সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের জাতীয় ইলেক্ট্রনিক্স ও ক্রিপ্টোগ্রাফি রিসার্চ ইনস্টিটিউট Pardus নামক এই ডিস্ট্রিবিউশন তৈরী করা শুরু করে এবং ২০০৫ সালের ২৭শে ডিসেম্বর এটার ১.০ ভার্সনের অফিসিয়াল ঘোষনা দেয়।
  • ২০১০ সালে ফিলিপিনসে উবুন্টু চালিত জাতীয় ভোট গ্রহণ সিস্টেম চালু করা হয়।
  • ২০১০ সালের জুলাই মাসে মালয়েশিয়ার সরকারী ৭২৪টা এজেন্সির মধ্যে ৭০৩টায় লিনাক্স ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেমের মাধ্যমে ফ্রী এবং ওপেনসোর্স সফটওয়্যার ব্যবহার করা শুরু হয়। সরকারের প্রধান সচিব বলেছিলেন যে, এটার মূল লক্ষ্য হল উন্নততর মান, উচ্চ নির্ভরযোগ্যতা, অধিকতর পরিবর্তনযোগ্যতা (flexibility) এবং স্বল্প খরচ।
  • ২০১০ সালের শেষের দিকে ভ্লাদিমির পুতিন, রাশিয়া ফেডারেশন সরকারের ২০১২ সালের মাঝামাঝির মধ্যে লিনাক্স এবং ফ্রী সফটওয়্যারে সরে আসার একটি পরিকল্পনায় স্বাক্ষর করেন।
  • আমেরিকার ফ্লোরিডার লার্গো শহরের প্রশাসন লিনাক্স ব্যবহার করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিতি লাভ করে। এটা থেকে শহর ব্যবস্থাপনার প্রচলিত পদ্ধতির চেয়ে অনেক বেশি সাশ্রয়ের ব্যাপারটা বোঝা যায়।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে

শিক্ষার জন্য উবুন্টুর একটা ভার্সন আছে - যা এডুবুন্টু নামে পরিচিত।

প্রায়শঃই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তিগত বিষয়গুলোতে এবং গবেষণা কেন্দ্রগুলোতে লিনাক্স ব্যবহৃত হয়। এটা বিনামূল্যে উপলব্ধতা এবং অসংখ্য সফটওয়্যার ব্যবহারের সুযোগ থাকা এর পেছনে অনেকগুলো কারণের মধ্যে রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে কম্পিউটার সায়েন্স এবং সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং থেকেও লিনাক্সে কিছু অবদার রাখে। আইবিএম "লিনাক্স ইজ এডুকেশন" নামে একটা বিজ্ঞাপন তৈরী করেছে, যেখানে একটা ছোট ছেলেকে দেখানো হয় যে বড় হয়ে লিনাক্স (লিনুস?) হয়।

বৃহৎ পরিসরে লিনাক্স গ্রহণকরার কিছু উদাহরণ নিচে তুলে ধরা হলঃ

  • OLPC XO-1 (ওয়ান ল্যাপটপ পার চাইল্ড: যা আগে এমআইটির ১০০ ডলার ল্যাপটপ প্রজেক্ট বা বাচ্চাদের ল্যাপটপ নামে পরিচিত ছিল) হল একটা সস্তা ল্যাপটপ যা লিনাক্সে চলে; এই ল্যাপটপটি মূলত: উন্নয়নশীল বিশ্বে প্রতি শিশুর জন্য একটি ল্যাপটপ প্রজেক্টের অধীনে কয়েক মিলিয়ন শিশুর মধ্যে বিতরণ করার লক্ষ্যে তৈরী করা হয়েছে।
  • মেসিডোনিয়ার ২০০৫ সালের ডিসেম্বরে ৪৬৮টি সরকারী স্কুল এবং ১৮২টি কম্পিউটার ল্যাবে ৫০০০ উবুন্টু চালিত ডেস্কটপ কম্পিউটার ব্যবহার করা শুরু করে। পরবর্তীতে ২০০৭ সালে উবুন্টু চালিত আরো ১,৮০,০০০ থিন ক্লায়েন্ট কম্পিউটার চালু করা হয়। (থিন ক্লায়েন্ট হল একটা শক্তিশালি সিপিইউ থেকে অনেকগুলি মনিটর, কিবোর্ড ও মাউসের সাহায্য অনেকে ব্যবহারের সুবিধা - অনেকটা মেইনফ্রেম কম্পিউটারের মত)
  • ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইটালির বোলযানোর ১৬,০০০ স্কুল ছাত্রের ক্লাসরুমে ব্যবহারের জন্য একটা সংকলিত লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশন চালু করে। (FUSS Soledad GNU/Linux)
  • ব্রাজিলের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক সরকারী স্কুলগুলোতে প্রায় ২০,০০০ লিনাক্স ডেস্কটপ চলছে।
  • ভারতের কেরালা রাজ্যের সরকারী কর্মকর্তারা ঘোষনা করেন যে, তারা কম্পিউটার শিক্ষার জন্য শুধুমাত্র লিনাক্সে চালিত ফ্রী সফটওয়্যার ব্যবহার করবে;  ২,৬৫০টি সরকারী ও সরকারী অনুদানপ্রাপ্ত উচ্চ বিদ্যালয় দিয়ে এটা শুরু করা হয়।
  • ২০০৬ সালে আমেরিকার ইন্ডিয়ানা রাজ্যের ২২,০০০ ছাত্রের জন্য তাদের উচ্চ বিদ্যালয়গুলোতে লিনাক্স ওয়র্কস্টেশন ব্যবহারের সুযোগ ছিল।
  • ২০০৭ সালে জার্মানি এর ৩৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫,৬০,০০০ ছাত্র লিনাক্স ব্যবহার করবে বলে ঘোষনা দিয়েছে।
  • ফিলিপিনসে ১৩,০০০ ডেস্কটপে ফেডোরা চলে, যার প্রথম ১০,০০০ ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে ASI (Advanced Solutions Inc) এগুলো সরবরাহ করে। মাইক্রোসফট ২০ ডলারে উইন্ডোজ আর ৩০ ডলারে অফিস দেয়ার প্রতিযোগীতামূলক অফার দেয়ার কারণে এই প্রজেক্টের সিদ্ধান্ত ৪/৫ মাস পিছিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু তাসত্ত্বেও লিনাক্স আরো স্বল্পখরচের সমাধান হিসেবে বিবেচিত হয়। এই প্রজেক্টে আরো ১০,০০০ এডুবুন্টু ও কুবুন্টু ডেস্কটপ দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
  • লাইসেন্স খরচ বাঁচাতে ২০০৭ সালের অক্টোবরে রাশিয়া সমস্ত স্কুলের কম্পিউটার লিনাক্সে চালানোর ঘোষনা দেয়।
  • ২০০৪ সালে জর্জিয়া এর সমস্ত স্কুলের কম্পিউটারগুলো এবং লিনাক্স টার্মিনাল সার্ভার প্রজেক্টের (LTSP) থিন ক্লায়েন্টগুলো লিনাক্সে চালানো শুরু করে। এখানে মূলত কুবুন্টু, উবুন্টু এবং হালকা ফেডোরা নির্ভর ডিস্ট্রো ব্যবহার করা হচ্ছে।
  • ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর নাগাদ সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ৯০০০ কম্পিউটারে লিনাক্স ও ওপেন অফিস ব্যবহার শুরু হয়।
  • ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যে ছাত্রদেরকে ১,০০,০০০ লিনাক্স ল্যাপটপ বিতরনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। (২০০৮)
  • অভ্যন্তরীন শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে চীন সরকার ১৫ লক্ষ লিনাক্স loongson পিসি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া জিয়াঙ্গসু প্রদেশে ২০০৯ সাল থেকে গ্রামাঞ্চলের স্কুলগুলোতে ১,৫০,০০০ loongson প্রসেসর চালিত লিনাক্স পিসি স্থাপন করা হবে।
  • ভারতীয় সরকাররের ছাত্রদের জন্য ট্যাবলেট পিসি প্রজেক্টের লক্ষ্য হল ১,৫০০ রুপীর (৩৫ ডলার) কমে ট্যাবলেট পিসি বানানো, এই পিসিগুলো লিনাক্সে চলে।

আবাসিক গৃহে

  • সনির প্লেস্টেশন-৩ এর ভেতরে হার্ডডিস্ক (২০, ৬০ ও ৮০ গিগাবাইট) দেয়া হয়েছে এবং এটা সহজে লিনাক্স ইনস্টলের উপযোগী করে তৈরী করা হয়েছে। অবশ্য এর ৩ডি গ্রাফিক্স ফীচারগুলো লিনাক্সে চালানোর সুযোগ দেয়া হয় না। এছাড়া সনি এর প্লেস্টেশন-২ এর জন্যও লিনাক্স কিট ছেড়েছে। সহজ ইনস্টলেশন আর তুলনামূলক কম দামের কারণে (প্লেস্টেশন-৩ এর তুলনায় সমপর্যায়ের অন্য হার্ডওয়্যার ক্রয়ের ক্ষেত্রে) ছোট পরিসরে ডিস্ট্রিবিউটেড কম্পিউটিং পরীক্ষার জন্য মাঝে মাঝে এই লিনাক্স চালিত প্লেস্টেশন হার্ডওয়্যার ব্যবহৃত হয়। নিরাপত্তা বিবেচনায় ২০১০ সালের ১লা এপ্রিলে লিনাক্স ইনস্টলের সুবিধা রহিত করে এবং ফার্মওয়্যার ৩.২১ ব্যবহার শুরু করে।
  • ২০০৮ সালে নেটবুকের অনেকগুলো মডেল হালকা লিনাক্স (xandros, linpus) ইনস্টল করা অবস্থায় সরবরাহ করা হত। এতে এর সীমিত ক্ষমতা সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা যেত।
  • ২০০৭ ও ২০০৮ এ ব্যবহারবান্ধবতা বিচারে উবুন্টুর মত লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশনগুলোর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে, ফলে ডেলের মত কিছু নির্মাতা উবুন্টু এবং অন্য লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশন চালিত ডেস্কটপ কম্পিউটার মডেল বাজারে ছাড়ে।

ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহ

রেডহ্যাট এন্টারপ্রাইজ লিনাক্স, সুযে লিনাক্স এন্টারপ্রাইজ ডেস্কটপ এবং লিনস্পায়ারের মত বাণিজ্যিক লিনাক্স সমাধানগুলো কিছু কর্পোরেটে ব্যবহৃত হয়।

  • ১৯৯৯ সাল থেকে বার্লিংগ্টন কোট ফ্যাক্টরি (Burlington Coat Factory) শুধুমাত্র লিনাক্স ব্যবহার করে।
  • ২০০০ সাল থেকে আর্নি বল (Ernie Ball) নামক সুপার স্লিংকি গিটারের স্ট্রিং প্রস্তুতকারক লিনাক্স ডেস্কটপ চালায়।
  • নোভেল উইন্ডোজ থেকে লিনাক্সে স্থানান্তরিত হচ্ছে। এর ৫,৫০০ কর্মীর মধ্যে ৫০% এপ্রিলের ২০০৫ নাগাদ সফলতার সাথে লিনাক্সে চলে এসেছে। নভেম্বর মাস নাগাদ এটা বেড়ে ৮০% হওয়ার কথা।
  • Wotif নামক অস্ট্রেলিয়ান হোটেল বুকিং ওয়েবসাইট তাদের ব্যবসার প্রবৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্যতা রক্ষায় উইন্ডোজ সার্ভার থেকে লিনাক্স সার্ভারে সরে আসে।
  • ক্যালিফোর্নিয়ার ইউনিয়ন ব্যাংক খরচ কমানোর জন্য এর আইটি অবকাঠামো রেড হ্যাট এন্টারপ্রাইজ লিনাক্স উপযোগী করার ঘোষনা দেয় ২০০৭ সালের জানুয়ারী মাসে।
  • ২০০৭ সালে ইউরোপের গাড়ি প্রস্তুতকারক Peugeot ঘোষনা করে যে এরা ২০,০০০ কপি নোভেলের লিনাক্স ডেস্কটপ, সুযে লিনাক্স এন্টারপ্রাইজ ডেস্কটপ এবং ২,৫০০ কপি সুযে লিনাক্স এন্টারপ্রাইজ সার্ভার চালু করবে।
  • মাইন্ডব্রিজ নামক একটা সফটওয়্যার কোম্পানি ২০০৭ সালে ঘোষনা দেয় যে, এটা অনেকগুলো উইন্ডোজ সার্ভার থেকে কমসংখ্যক লিনাক্স সার্ভার এবং কিছুসংখ্যক বিএসডি সার্ভারে প্রতিস্থাপন করবে। এরা এভাবে বেশ বড় পরিমান সাশ্রয় করেছে বলে দাবী করেছে।
  • আমেরিকার বাজেট এয়ারলাইন, ভার্জিন আমেরিকা এর বিমানের REDএন্টারটেইনমেন্ট সিস্টেম লিনাক্সে চালায়।
  • আমেরিকার ইন্টারনেট ভিত্তিক বেচাকেনা প্রতিষ্ঠান আমাজন.কম এর ব্যবসার প্রতিটা ক্ষেত্রেই লিনাক্স ব্যবহার করে।
  • গুগল Goobuntu নামক উবুন্টু ভিত্তিক একটা অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে।
  • আইবিএম লিনাক্সের প্রচুর উন্নয়নমূলক কাজে জড়িত, এবং তাঁদের অফিসে সার্ভার এবং ডেস্কটপে লিনাক্স ব্যবহার করে। এছাড়া “IBM supports Linux 100%” শিরোনামে একটা টিভি বিজ্ঞাপন করেছে।
  • উইকিপিডিয়া ২০০৮ সাল থেকে এর সার্ভারগুলো উবুন্টুতে চালায়, এর আগে রেড হ্যাট এবং ফেডোরার সমন্বয়ে চালাতো।
  • ড্রিমওয়র্কস এনিমেশন কোম্পানি ২০০১ সাল থেকে লিনাক্স ব্যবহার শুরু করে। এদের ১,০০০ এরও বেশি লিনাক্স ডেস্কটপ এবং ৩,০০০ এর বেশি লিনাক্স সার্ভার রয়েছে।
  • শিকাগো মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জ সমস্ত কম্পিউটিং অবকাঠামোই লিনাক্সে চালায়, এবং এটা ব্যবহার করে এক কোয়াড্রিলিয়ন ডলারের বেশি লেনদেন সম্পন্ন করেছে।
  • Chi-X প্যান ইউরোপিয়ান ইক্যুয়িটি এক্সচেঞ্জ এর মার্কেটপ্রিজম ট্রেডিং প্লাটফর্ম সফটওয়্যারটি লিনাক্সে চালায়।
  • লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ লিনাক্স নির্ভর মিলেনিয়ামআইটি মিলেনিয়াম এক্সচেঞ্জ সফটওয়্যারটা ব্যবহার করে সমস্ত ট্রেডিং পরিচালনা করে। উইন্ডোজের বদলে লিনাক্স ব্যবহারের ফলে ২০১১‌-১২ অর্থবছরে তাঁদের কমপক্ষে ১০ মিলিয়ন ইউরো (১৪.৭ মিলিয়ন ডলার) খরচ বাঁচবে বলে অনুমান করেছে।
  • নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ এর সমস্ত ট্রেডিং সফটওয়্যার লিনাক্সে চালায়।
  • আমেরিকার ইলেক্ট্রনিক মিউজিক কম্পোজার কিম ক্যাসকোন তার মিউজিক স্টুডিও, পার্ফর্মেন্সে ব্যবহার এবং এডমিনিস্ট্রেশনের সমস্ত কাজ ২০০৯ সাল থেকে এ্যাপল ম্যাকের বদলে উবুন্টুতে করছেন।
  • ম্যাকডোনাল্ডস এর ম্যাক ক্যাফেতে উবুন্টু ব্যবহার করে।
  • উইন্ডোজের স্পাইওয়্যার সমস্যার কারণে লাফিং বয় রেকর্ডস এর মালিকের নির্দেশে এর রেকর্ডিং‌এর কাজ উইন্ডোজ থেকে লিনাক্সে নিয়ে এসেছে ২০০৪ সালে।
  • ২০১১ সাল থেকে কাজ শুরু করা ন্যাভ কানাডার নতুন ইন্টারনেট ফ্লাইট প্লানিং সিস্টেম পাইথনে করা এবং রেড হ্যাট লিনাক্সে চলে।
  • স্মার্ট রেফ্রিজারেটর ইলেক্ট্রোলাক্স ফিজিডেয়ার ইনফিনিটি আই‌-কিচেন লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে যার মধ্য একটা এমবেডেড ৪০০ মেগাহার্টজ্ ফ্রীস্কেল I.MX25 প্রসেসর এবং ১২৮ মেবা RAM এবং ৪৮০x৮০০ টাচ প্যানেল রয়েছে।

বৈজ্ঞানিক সংস্থা সমূহ

  • আমেরিকার পারমানবিক নিরাপত্তা প্রশাসনে পৃথিবীর ৩য় দ্রুততম সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করে; এটার নাম আইবিএম রোডরানার, এবং এটা রেড হ্যাট এন্টারপ্রাইজ লিনাক্স এবং ফেডোরা দিয়ে চলে।
  • লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার এবং এর ২০,০০০ অভ্যন্তরিন সার্ভার চালানোর জন্য সায়েন্টেফিক লিনাক্স ব্যবহার করে এর গবেষণাপ্রতিষ্ঠান CERN।
  • ইউনিভার্সিটি অব টরন্টোতে কানাডার সবচেয়ে বড় সুপার কম্পিউটার, আইবিএম আইডেটাএক্স ক্লাস্টার কম্পিউটার, চালাতে লিনাক্স ব্যবহার করে।
  • ইন্টারনেট ক্যাটালগ করতে ইন্টারনেট আর্কাইভ এর শত শত এক্স৮৬ সার্ভার সবই লিনাক্সে চালায়।
  • ASV Roboat নামক স্বায়ত্বশাসিত রোবোটিক নৌকা লিনাক্সে চলে।
  • অক্টোবর ২০১০ পর্যন্ত বিশ্বের দ্রুততম সুপার কম্পিউটার Tianhe-I, লিনাক্সে চলে। এটা চীনের তিয়ানজিনে ন্যাশনাল সেন্টার ফর সুপারকম্পিউটিংএ অবস্থিত।
  • FermiLabএর Dark Energy Camera এবং সংশ্লিষ্ট ৪মিটার টেলিস্কোপ যা The Dark Energy Survey প্রগ্রামের অংশ, পরিচালনা এবং এর সমস্ত ডেটা সংরক্ষণ করার জন্য লিনাক্স ব্যবহার করবে।
  • যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব পোর্টস্মাউথ পৃথিবীর বিভিন্ন টেলিস্কোপের ডেটা বিশ্লেষনের জন্য একটা উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন এবং সাশ্রয়ী (cost effective) কম্পিউটার চালু করেছে। এটা দিয়ে ব্রক্ষ্মান্ড সম্পর্কে প্রচলিত তত্বগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হবে। এটা সায়েন্টিফিক লিনাক্স নামক অপারেটিং সিস্টেমে চলে। পোর্টস্মাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ডেভিড বেকন বলেন  "Our Institute of Cosmology is in a great position to use this high performance computer to make real breakthroughs in understanding the universe, both by analysing the very latest astronomical observations, and by calculating the consequences of mind-boggling new theories...By selecting Dell’s industry-standard hardware and open source software we’re able to free up budget that would have normally been spent on costly licenses and reinvest it."।

তথ্যসূত্র:

এই লেখাটি মূলত একটি অাংশিক অনুবাদ। নিচের লিংকগুলোর ইংরেজি থেকে কিছু অংশ এখানে বাংলা করা হয়েছে।

১। http://en.wikipedia.org/wiki/Linux_adoption
২। http://en.wikipedia.org/wiki/PC_Conectado
৩। http://en.wikipedia.org/wiki/LinEx
৪।  http://www.computerworld.com.au/article/204950/23_000_linux_pcs_forge_education_revolution_philippines/?pp=1

বাংলাদেশে:

এদেশেও কিছু মানুষ আর প্রতিষ্ঠান আছে যারা ঘরে ও অফিসে লিনাক্স ব্যবহার করে। তথ্যের অভাবে সব দেয়া সম্ভব হল না। তবে কিছু বোকা লোকের একটা তালিকা ইদানিং তৈরী করা শুরু হয়েছে। এখানে ক্লিক করে দেখতে পারেন

বুধবার, ১৮ মে, ২০১১

ছবি রিসাইজ বা রোটেট করা এতই সোজা!

এক বা একাধিক ছবি সিলেক্ট করে মাউসের ডান ক্লিকে যেই মেনুটা খোলে সেখানে Resize Images .... এবং Rotate Images .... আসলে কার না ভালো লাগে। বিশেষত ফেসবুক বা অন্য সাইটগুলোতে ছবি আপলোডের সময় এইরকম করা তো খুবই দরকার। এই কাজটাই করার উপায় জানিয়ে রাখি:
আগে দেখি কীভাবে কাজ করে: দেখুন ছবির উপর ডান ক্লিকে কী দেখাচ্ছে (একাধিক ছবির ক্ষেত্রেও একই তরিকা)



এরপর Resize Images ... এ ক্লিক করলে যেই অপশনগুলো আসবে সেটা দেখুন:


উপরের ছবিতে লক্ষ্য করলে দেখবেন যে, ইমেজের সাইজ ৩ ভাবে দেয়া যায়। প্রথমত নির্দিষ্ট সাইজ থেকে সিলেক্ট করে। অথবা সরাসরি কত পার্সেন্ট ছোট করবে সেটা বলে দিতে হবে। আর ৩য় অপশন হল কাস্টম পিক্সেল সাইজ। আমার ছবিটা পাশে বড়, তাই আমি শুধু পাশে ৬০০ পিক্সেল হবে বলে দিলাম। উচ্চতা অটোমেটিকভাবে ঠিক হয়ে যাবে। এছাড়া দেখুন নতুন যেই ছবিটা আসবে সেটা আগের ছবির সাথেই সেভ হবে, কিন্তু নামের সাথে .resized কথাটা ডিফল্টভাবে লেগে যাবে (‌Append), ফলে ওভাররাইট হওয়ার সুযোগ নাই। এখানে নিজের ইচ্ছামত যেকোনো কিছুই দেয়া যায়। ব্যাস কাজ শেষ। Resize বাটনে চাপ দিলেই কেল্লা ফতে।

একইভাবে রোটেট সিলেক্ট করলে নিচের মত অপশন আসবে:



আমি একটু দুষ্টামি করে ৪৫ ডিগ্রি দিলাম। আউটপুট দেখেন নিচে:



কিভাবে এই কেরামতি মার্কা মেরামতি আপনার ডান ক্লিকে আনা যায় জানতে কৌতুহল হচ্ছে নাকি? তবে নিচের ছবি দেখুন সব ফকফকা লাগবে:



উবুন্টুর সফটওয়্যার কয়েকভাবে ইনস্টল করা যায়। আমি সহজতমটা দেখাচ্ছি। মেনু থেকে উবুন্টু সফটওয়্যার সেন্টারে ক্লিক করলে যেই উইন্ডো খোলে সেটার সার্চ বক্সে লিখুন nautilus-image আর লেখার আগেই আপনাকে শর্টলিস্ট করে এরকম তিনটা নাম দেখাবে। সেখান থেকে nautilus-image-converter টার ডানদিকের ইনস্টল বোতামে চাপ দিন। আমি ইতিমধ্যেই ইনস্টল করে ফেলেছি দেখে ইনস্টল বোতামের বদলে রিমুভ বোতাম দেখাচ্ছে। সাইজ ৩-৪শ কিলোবাইট বলে মনে পড়ছে।

একই কাজ সিনাপ্টিক থেকেও করা যায়।

হ্যাপি বুন্টু মিন্টিং।

টিপসটার জন্য উবুন্টু মেইলিং লিস্টে সগীর ভাইয়ের প্রশ্নের জবাবে রিং ভাইয়ের উত্তরে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

সোমবার, ৯ মে, ২০১১

জরিপ: বাংলাদেশে কয়জন লিনাক্স ব্যবহার করেন?

উবুন্টু বাংলাদেশ মেইলিং লিস্টে জনৈক মেহদী ভাই হঠাৎ জানতে চাইলেন - আসলে বাংলাদেশে কতজন লিনাক্স ব্যবহার করে। কেউ বলে শ, কেউ কয় হাজার। তখন মাথায় একটা বুদ্ধি আসলো, জরিপ করা হউক। এই জরিপে আপনি বা আপনার পরিচিত লিনাক্স ব্যবহারকারীর হয়ে ফর্ম পূরণ করে দিতে পারেন।

কয়েকজনে মিলে গুগল ডকসে একটা জরিপ স্প্রেডশীট বানালাম। ডেটা এন্ট্রি করতে হবে ফর্ম ফিলাপ করে - অপশনাল মন্তব্যের ঘরে কেউ যদি কাহিনী না লিখেন তাহলে এটাতে ২ থেকে ৫ মিনিট লাগতে পারে। সকলের জন্য ফোন নং বা ইমেইলের মত তথ্যগুলো উন্মুক্ত করা ঠিক নয়, তাই এই ডেটা শুধুমাত্র আমি বা শিপলু দেখতে পারি। কিন্তু মানুষের তথ্যতে অধিকার আছে। তাই ইমেইল, ঠিকানা ও ফোন নং-এর মত তথ্যগুলো লুকিয়ে রেখে বাকীগুলো নিয়ে একটা সংক্ষিপ্ত তালিকা (!) প্রকাশ করে রেখেছি। প্রতিদিন এটাকে আমি একবার করে সর্ট করে রাখবো যাতে জেলা অনুযায়ী কয়জন সেটা সহজে বোঝা যায়।

প্রবাসীগণ এই ফর্ম পূরণের সময়ে জেলার স্থলে সর্বনিম্নে "প্রবাসী" এন্ট্রি ব্যবহার করতে পারেন।

নিচে ফর্মটা এমবেড করে দিলাম। যদি কোন কারণে এটা দেখতে না পারেন তবে সরাসরি এই লিংক থেকে ফর্ম ফিলাপ করতে পারেন। অন্যকে বলার জন্য সহজ লিঙ্ক হল http://bit.ly/lubd11 (lubd11 = Linux Users Bangladesh 2011)। আর কথা না বাড়াই, ধন্যবাদ।
.

বৃহস্পতিবার, ৫ মে, ২০১১

PTC হল প্রতারককে সাহায্য করা – ভুল বললে শুধরিয়ে দিন

কিছু বাংলা ব্লগসাইটে PTC বা Pay to Click নিয়ে পোস্টের ছড়াছড়ি দেখে খারাপ লাগে। পিটিসি টাকা ইনকামের কোন সম্মানজনক পদ্ধতি বলে মনে হয় না কখনই। এটা সংঘবদ্ধ প্রতারককে সহযোগীতা করার একটা পদ্ধতি ছাড়া কিছুই না।

কিছুদিন আগে আমাদের দেশে বেশ কিছু কাজ আসতো, ছবি দেখে ওখানে যা লেখা আছে তা টাইপ করার কাজ। ছবির লেখাগুলো খুব সাধারণ আর দৈর্ঘ্যও খুব বেশি না - একটা কি দুইটা শব্দ। পাবলিক তো ভাবলো, আহ্ কি সহজ কাজ -- টাকাও কামাইলো। কিন্তু ফলাফল হল বাংলাদেশের অনেক আইএসপি এখন ব্ল্যাক লিস্টেড এই কারণে। কারণটা কী? জানতে চান?

কারণ - এগুলো ছিল ক্যাপচা পূরণের কাজ। বিভিন্ন সাইটে রেজিস্ট্রেশন বা পোস্ট করার জন্য স্প্যাম ঠেকানোর জন্য ক্যাপচা দেয়া হয়। উদ্দেশ্য হল অটোমেটিক কোন স্ক্রিপ্ট দিয়ে এখানে তাহলে স্প্যামারটা কিছু পোস্ট করতে পারবে না - কারণ অটোমেটিক স্ক্রিপ্ট এই ক্যাপচা পূরণ করতে অক্ষম। দুষ্টু স্প্যামাররা তখন সেই কাজ করার জন্য এই কাজ আউটসোর্সিং করলো। ওদের স্ক্রিপ্ট একটা করে ক্যাপচা নিয়ে আসে আর এখানকার লোক টাকার জন্য সেটা পূরণ করা মাত্র ওদের স্ক্রিপ্ট ওখানে একটা স্প্যাম পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু দোষ হয় এখানকার আইপি'র। কারণ ওখানকার এডমিনরা দেখে যে, এখানকার আইপি থেকে এই ক্যাপচা পূরণ করে স্প্যাম পোস্ট করা হয়েছে।

এবার আসি পিটিসির ব্যাপারে। অ্যাডসেন্স কিভাবে কাজ করে সেটা বুঝতে হবে এজন্য। ইন্টারনেটে কোনো কম্পানি বিজ্ঞাপন দিলে সেটার জন্য পেমেন্ট দেয়ার সিস্টেমটা বেশ সুন্দর। তবে সেটা বলার আগে ইন্টারনেটের বদলে বাইরের বিজ্ঞাপনের কথা বলি .... ... একটা বিলবোর্ডে বিজ্ঞাপন দিলে সেটার ভাড়া স্থানভেদে ভিন্ন হয়। ঢাকার ফার্মগেটের মত জায়গায় যেখানে প্রচুর লোক এই বিজ্ঞাপন দেখে সেখানে বড়সড় একটা বিলবোর্ডের ভাড়া মাসে লাখটাকার মত, আর একই বিলবোর্ড মিরপুর বা অন্য জায়গায় হলে সেটার ভাড়া ত্রিশহাজার টাকার মত। ভাড়ার এই তারতম্যের কারণ হল এই বিলবোর্ড কতজন সম্ভাব্য কাস্টমারের কাছে পণ্যটার কথা পৌঁছে দিচ্ছে সেটা। বেশি কাস্টমারের কাছে পৌঁছে দিলে চার্জ বেশি, আর কম কাস্টমারে চার্জ কম। একই কারণে বেশি প্রচারসংখ্যার পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের চার্জ বেশি (বেশি লোকের কাছে পণ্যের বিজ্ঞাপন পৌঁছাচ্ছে)। প্রথম আলোর মত পত্রিকার প্রথম পাতায় একবার (১ দিন) ৩*৫ বর্গইঞ্চি বিজ্ঞাপনের চার্জ লাখটাকা, কিন্তু একই বিজ্ঞাপন ৭ নম্বর পাতায় দিলে সেটার চার্জ ২০ হাজার -- কারণটা একই ... প্রথম বা শেষ পাতার বিজ্ঞাপন বেশি লোক দেখে, ভেতরের পাতার বিজ্ঞাপন দেখে কম মানুষ।

ইন্টারনেটে বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে এই বিজ্ঞাপনের রেট আরো বেশি যুক্তিসংগত করা গেছে। শুধুমাত্র সম্ভাব্য কতজন ক্রেতা সেই বিজ্ঞাপন দেখছে সেটার উপর ভিত্তি করে এখানেও ভাড়া বা মূল্য পরিশোধ করা হয়। একটা বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে এটা সম্পর্কে আরেকটু ডিটেইলস খোঁজ খবর নেবে শুধুমাত্র আগ্রহী ক্রেতা, অন্যরা এই ব্যাপারে আগ্রহী না হলে এটাতে ক্লিক করার মত কাজ করে সময় নষ্ট করবে না। যেমন: আমি যখন ক্যামেরা কেনার কথা চিন্তা করি তখনই শুধু বিভিন্ন ক্যামেরার বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে স্পেসিফিকেশন দেখবো, কেনার চিন্তাভাবনা না থাকলে শুধু শুধু ক্লিক করে সময় ও ব্যান্ডউইড্থ নষ্ট করবো না। আবার, কখনো দেখা যায় ভুল ক্রমে কেউ একটা বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে ফেলেছে - তখন দ্রুত সে ঐ সাইট থেকে বেরিয়ে যায়, বিজ্ঞাপনে কী লেখা আছে সেটা পড়ার দরকার বোধ করে না।

তাই ইন্টারনেটে বিজ্ঞাপন দাতাগণ এখানে বিজ্ঞাপনে কতগুলো ক্লিক হয়েছে সেটার উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞাপন প্রকাশের সাইটকে মূল্য পরিশোধ করে। তবে আগ্রহী ক্রেতা তারাই যারা অন্তত ৩০ সেকেন্ড ঐ বিজ্ঞাপনটা দেখেন, এর চেয়ে কম দেখলে তিনি আসলে আগ্রহী ক্রেতা নন, ভুলক্রমে ঐ সাইটে ক্লিক করে ঢুকেছিলেন বলে ধরা হচ্ছে।

এইখানেই পিটিসি সাইটগুলো চিট করে। আপনি ক্লিক করে ঢুকছেন, ৩০ সেকেন্ড থাকছেন --- কাজেই আপনি সম্ভাব্য ক্রেতা। এই ক্লিকের জন্য বিজ্ঞাপনদাতা সাইটকে পে করবে। আর সাইটওয়ালা আসলে অসৎ ... ... কারণ তার সাইটে আসলে জেনুইন ক্রেতা ক্লিক করে নাই, করেছে ভাড়া করা ক্রেতার অভিনেতা (আপনি)। তাই তার ইনকাম থেকে কিছু অংশ আপনার অভিনয়ের চার্জ হিসেবে দিয়ে দিচ্ছে।

একই কারণে একই বিজ্ঞাপনে একাধিকবার ক্লিক করা নিষেধ। কারণ সেখানে মূল বিজ্ঞাপনদাতার একজন সম্ভাব্য ক্রেতার জন্য একবারই মূল্য পরিশোধের কথা। আপনি একাধিকবার ক্লিক করলে সেটার জন্য সাইটওয়ালা চার্জ করবে এতে সাইটওয়ালাকে বিজ্ঞাপনদাতা এর জন্য টাকা তো দেবেই না উল্টা মিথ্যাবাদী বলবে আর ভবিষ্যতে বিজ্ঞাপনও দেবে না। তাই সাইটওয়ালারা এই অভিনেতা ক্রেতা আনার ব্যাপারে খুবই সতর্ক। একাধিক ক্লিক করলে পিটিসি একাউন্ট বাতিল ... .... .... মিয়া প্রতারণার সহযোগী হতে হলে আরো স্মার্ট হতে হবে - সহযোগীতা করতে গিয়ে ওস্তাদরে ফাঁসায় দিবেন নি - আপনি বাতিল!
এই হইলো কাহিনী।

পুরাটা আমার কমনসেন্স থেকে লিখেছি। ভুল থাকতে পারে। থাকলে ধরিয়ে দিবেন আশা করছি ... ... আর সিদ্ধান্ত নিবেন - এই প্রতারণার সহযোগী হবেন কি না।