রবিবার, ২৩ মার্চ, ২০০৮

বিষ্মিত, অভিভূত!

আজ অফিস থেকে ফেরার পথে বাসার কাছের দোকান থেকে চাল এবং চকলেট কিনে বাসায় ফিরলাম। ফেরার কথা ছিল ৬টায়, কিন্তু মিটিং থাকাতে ফিরতে ফিরতে ৮টা বেজেছে। মাথা এবং ঘাড় একটু ব্যাথা করছিল। সম্ভবত বার্ধক্যের দিকে ধাবিত হওয়ার পথে কোন চেক পয়েন্ট পার হয়েছি। গতকালও হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। ফলে নির্ধারিত ক্লাস বাতিল করেছিলাম। আজও মনে হয় সেই রকমই কোন অসুস্থতা আঘাত করবে .... ...।

বাসায় এসেই কাপড় পাল্টে গোসল করে শুয়েছি। বউ বলছে রাতের খাবার খেয়ে এই ঝামেলা চুকিয়ে ফেলতে। এমন সময় কেউ একজন কড়া নাড়ল। দেখি দোকানের কর্মচারী ... বলছে আপনি দোকানে সম্ভবত মানিব্যাগ ফেলে এসেছেন। আমিতো অবাক!! ... ... কাপড় পাল্টানোর সময় বের করে রাখা জিনিষপত্র ঘেটে দেখলাম আসলেই তাই ... মানিব্যাগ নাই।

ইতিমধ্যে একটা ফোন আসল। দোকান থেকে এর মালিক সোহাগ ফোন করেছেন (বয়স ৩০এর কমই হবে) ... সম্ভবত মানিব্যাগের ভেতরে আমার ভিজিটিং কার্ড থেকে ফোন নম্বর নিয়ে ফোন করেছে। জানালাম যে, ঠিক .... আপনার কর্মচারীও এসেছেন। এরপর, দোকানে গিয়ে মানিব্যাগ নিয়ে আসলাম। মানিব্যাগে প্রায় আড়াই হাজার টাকা ছিল .... সবই অক্ষত।

আমি সত্যই বিষ্মিত, অভিভূত!!


সচলায়তনে প্রকাশিত

ডাক্তারদের থেকে শেখা


আব্বা একবার হার্টের কেরাবেরা অবস্থায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ-এর সি.সি.ইউতে ভর্তি হলেন (এই যায় যায় অবস্থা)। তখন বিভিন্ন বড়, ছোট, পাতি ... ডাক্তার রাউন্ডে দেখতে আসতো আর বিভিন্ন মন্তব্য করতো। এই সব গুজুর গুজুর শুনে আমরা মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছিলাম যে সুস্থতার জন্য আব্বাকে অবশ্যই হৃদপিন্ডে পেসমেকার লাগাতে হবে। খোঁজখবর নেয়াও শুরু করেছিলাম কোথায়, কিভাবে, কত খরচ, কতদিন টেকে ইত্যাদি বিষয়। খুবই সীমিত আয় ও সঞ্চয়ের লোক বিধায় আমাদের দুশ্চিন্তাও কম ছিল না। সেই সময়েই (২০০০ সালের দিকে সম্ভবত) পেসমেকারের দাম লাখ টাকায় (২ লক্ষ/ ৫ লক্ষ ...)হিসেব করতে হত যেটা যোগাড় করা আমাদের পক্ষে অসম্ভব না হলেও খুবই কঠিন ছিল।

পরবর্তীতে যেই ডাক্তার সাহেবের অধীনে ভর্তি হয়েছিলেন, ওনার পরামর্শমত পরীক্ষা করালাম ঐখানেই (হল্টার মনিটরিং), তারপর সেই ফলাফল ওনার ক্লিনিকে দেখালাম। হাসপাতালেও ডাক্তার স্যারদের দেখা পাওয়া যায় কিন্তু ঐ সময় রোগীর দিকে কতটুকু মনযোগ দিতে পারেন সেই ব্যাপারে সন্দেহ রয়েই যায় মনে। কারণ অনেক রোগী, তার উপর ছাত্রদের গ্যাঞ্জাম সামলে ... রোগীর দিকে মনযোগ দিতে হয়। সরকারী হাসপাতালে রোগী স্থির, ডাক্তারগণ ছোটাছুটির মধ্যে থাকেন ... তাই দেখা পাওয়ার জন্য দৌড়ে খুবই দক্ষতার প্রয়োজন, যেটা রোগীদের পক্ষে সম্ভব নয়; অপরপক্ষে ক্লিনিকে ডাক্তার স্থির, রোগীরা সহজেই খুঁজে পান ওনাদের। তাই ওনার চেম্বারেই গেলাম (ল্যাব এইড)। উনি কিছু ঔষধ লিখে দিয়ে ছেড়ে দিলেন ... বললেন ভাল হয়ে যাবেন। ঐটা শুনেই আব্বা অর্ধেক ভাল হয়ে গেলেন, কারণ পেসমেকারের খরচের চিন্তাটা ওনার বুকে একটা বিরাট দুশ্চিন্তার বোঝার মত হয়ে ছিল। বাকীটুকু সেরে গেল ঔষধ খেয়ে।

একই হাসপাতালের এক ডাক্তার বলল যে পেসমেকার ছাড়া এই রোগী শেষ আর আরেকজন ঐ নামই নিলেন না ... ব্যাপারটা একটু অবাক করার মত - তাই না! একটু অনুসন্ধান আর চিন্তা করে এর কারণ বুঝতে পেরেছিলাম অবশ্য: আব্বা ভর্তি হয়েছিলেন মেডিসিনের ডাক্তার প্রফেসর আব্দুজ্জাহের স্যারের অধীনে। তাই তিনি মেডিসিন দিয়ে রোগ নিরাময় করলেন। বাকী ফুসমন্তর দেয়া পাতি ডাক্তাররা বেশিরভাগই সার্জারীর ডাক্তার (ক্লিনিকের ব্যবসাও মাথায় থাকে) .. তাই সেই তরিকা বাৎলায়।

এই অধ্যায় থেকে একটা শিক্ষা পেয়েছিলাম .... : বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোন সমস্যা সমাধানের কয়েকটা বিকল্প ব্যবস্থা থাকে। যে শুধু একটাই জানে, সে সেটাকেই পরম সমাধান ধরে নেয়। আসলে পরম সমাধান বলে কিছু নাই। কাজেই চোখের সামনের সমাধান মনমত না হলে বিকল্পটা খুঁজে নিতে হবে। নিরাশ হলে নিজেরই ক্ষতি।


(দয়া করে কেউ আবার মাইন্ড খাইয়েন না)

সচলায়তনে প্রকাশিত

শনিবার, ২২ মার্চ, ২০০৮

মুঠোফোনে ইতরামী প্রসঙ্গে

মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ইতরামীর মাত্রা দিনকে দিন বেড়ে যাচ্ছে।

প্রায়ই মাঝরাতে একটা ফোন নম্বর থেকে আমার স্ত্রীর ফোন নাম্বারে ফোন আসে। ফোন যে করে, সে কোন এক জায়গা থেকে নম্বরটা জোগাড় করেছে কিন্তু সে পুরোপুরি নিশ্চিত না যে নাম্বারটা আমার বউএর-ই। কারণ আমার সে কখনই ফোন রিসিভ করে একটা শব্দ করেনি। ঐ এক লোকই যে ফোন করে সেটা নিশ্চিত কারণ ডিস্টার্ব করা নম্বরটা সেভ করে রাখা আছে। ফোনটা ধরে যদি আমি হ্যালো বলি, তাহলেই লাইন কেটে দেয়।

গতকাল রাতে আরেক ফোন থেকে একটা অশ্লীল (এতটাই অশ্লীল যে এখানে দিতে রুচি হচ্ছে না) মেসেজ এসেছে। মেজাজটা এত খারাপ হয়েছে যে বলার না।

কিছু একটা করা দরকার কিন্তু সেটা কী বুঝতে পারছি না। এই সমস্যা যে একা আমার তা হয়ত না। আরো পরিচিত অপরিচিত অনেকেরই হচ্ছে সেটা নিশ্চিত। ইভ টিজিং-এর ফলে আত্মহত্যার ঘটনাও ইদানিং পত্রিকায় আসছে। মোবাইলে ইতরামীর ফলে অত্যাচারীতের প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারটাও সেই পর্যায়ে যাক সেটা নিশ্চয়ই কারো কাম্য নয়।

সকল মোবাইল ফোন তো মালিকের নাম সহ রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। ফোন কম্পানিতে যোগাযোগ করলে কি এ ধরণের ক্রিমিনালদের পরিচয় বের করা যাবে? পরিচয় পেলেই বা কী? আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ঐ ফোনের মেসেজ যথেষ্ট হবে কি? তাছাড়া আইন প্রয়োগের কান্ডারীদের এড়িয়ে চলাই শ্রেয় বলে মনে হয়। কারণ পুলিশ আর উকিল ... দুটোই খুব খরুচে .... .... .... .... ড়্যাবকে বললে কী হবে? উল্টা আমাকেই যে হয়রানী করবে না তার কি কোন নিশ্চয়তা আছে?

সামাজিকভাবে এটা ঠেকানো যায় কি? বহুদিন পূর্বে সামহোয়্যারে পোস্ট করে রাগইমন আপা এমন মোবাইল ইতরামীর অভিযোগ করাতে ওনাকে বুদ্ধি দিয়েছিলাম যে শুধু নম্বরটা এখানে প্রকাশ করে দিন। সদস্য সকলেই ঐ নম্বরে ফোন করে ইতরের শান্তি বিঘ্নিত করবে। কেউ হয়ত পরিচয়ও প্রকাশ করে দিতে পারে। এই পদ্ধতিরও ক্ষতিকর দিক আছে ... ... শুধুমাত্র শত্রুতা করে নিরীহ কোন লোককে হেয় করার জন্যও একই পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারে কেউ - অবশ্যওওও.... মানুষের শুভবোধের উপর আস্থা রাখা যায় - সংখ্যালঘু এবং ছদ্মবেশী বদমাশদের জন্য ভয়ে সিটিয়ে থাকলে তো সমস্যা।

যা হোক আপাতত দ্বিতীয় পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায় কি না দেখি। পরিচয় ফাঁস করে দেই ... ...
আমার স্ত্রীকে রাতে ফোন করত যে ছেলে তার নম্বর .... দিলাম না, যেহেতু আর ডিস্টার্ব করেনি।
গতরাতে অশ্লীল মেসেজ পাঠিয়েছে যে তার নম্বর: 01717 049 983



সচলায়তনে প্রকাশিত

বাসায় আই.পি.এস. নেয়া হল

বউয়ের মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা চলছে। এর মধ্যে শুরু হয়েছে লোড শেডিং~X(। আই.পি.এস নিব নিব করে নেয়া হচ্ছিল না অলসতার জন্য। শেষ পর্যন্ত গত পরশু (বৃহস্পতিবার) ফোন করলাম পরিচিত সেই ছেলেটিকে। গতকাল (শুক্রবার) সকালে এসে আই.পি.এস. স্থাপন করে গেল। এর পর আর বিদ্যূতের লোড শেডিং হয়নি .... কাজেই আই.পি.এস. এর সুবিধাটুকুও ভোগ করতে পারিনি।

আই.পি.এস.গুলো পূর্ণ ক্ষমতায় দুই ঘন্টা বিদ্যূৎ সরবরাহ করতে পারে বলে দাবী করে। এক বছরের বিক্রয়োত্তর সেবা (ওয়ারেন্টি) দেয়। বর্তমানে বাজারে রহিম আফরোজের আই.পি.এস.-এর প্রচার ও সুনাম সর্বাধিক। তবে দামের দিক দিয়ে কিছু ক্ষেত্রে লুকাস ব্যাটারীর দাম কিছু ক্ষেত্রে রহিম আফরোজ ব্যাটারীর চেয়ে বেশি।

গত বছর আই.পি.এস. এর দাম আরো ৩/৪ হাজার টাকা করে কম ছিল। এবার ব্যাটারীর দাম বেড়ে গেছে। রহিম আফরোজের আই.পি.এস.-এর দরের চেয়ে ২/৩ হাজার টাকা কম দামে ঐ ছেলেটির সংস্থা আই.পি.এস. স্থাপন করে। গ্রাহকের পছন্দ মত রহিম আফরোজ, লুকাস বা হ্যামকো ব্যাটারী লাগিয়ে দেয়।

এবার ঐ ছেলেটির সরবরাহকৃত আই.পি.এস.-এর মূল্যতালিকা জানিয়ে দেই ... কারো উপকারে লাগতে পারে।

ক্ষমতা ---- দাম
৪০০ ভি.এ. ---- ১৬,৫০০ টাকা।
৬০০ ভি.এ. ---- ২২,০০০ টাকা।
৮০০ ভি.এ. ---- ২৮,০০০ টাকা।
১০০০ ভি.এ. ---- ৩৪,০০০ টাকা।
১৫০০ ভি.এ. ---- ৪০,০০০ টাকা। (লুকাস ব্যাটারী হলে ৪২,০০০ টাকা)
২০০০ ভি.এ. ---- ৬০, ০০০ টাকা। (লুকাস ব্যাটারী হলে ৬২,০০০ টাকা)

(ছেলেটার সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে, ফোন করুন: আমিনুল ইসলাম 01554 318 026)

ঘ্যানরঘ্যানরঃ বিদ্যূৎ বিভ্রাটে গাড়ী ভাড়া বৃদ্ধি

কান টানলে মাথা আসে।

বিদ্যূৎ না থাকলে গাড়ীর জ্বালানী সংগ্রহ কেন্দ্রে যন্ত্রপাতি চলে না। ফলে গ্যাস সংগ্রহের জন্য গাড়ীর দাঁড়িয়ে থাকতে হয় অতিরিক্ত কয়েক ঘন্টা (আগে লাগতো ১০ মিনিট এখন হয়ত ২ ঘন্টা ১০ মিনিট)। ফলশ্রুতিতে দায়ভারটা পড়ে গাড়ী ব্যবহারকারীদের উপর। ত্রিচক্রযানের ভাড়া স্বাভাবিকের চেয়ে ২০ টাকা বেশি (আগে লাগতো ৮০টাকা এখন ১০০ টাকা)। আশেপাশে ভাড়া করার মত তিন চাকার গাড়ীও আর চোখে পড়ে না .... নির্ঘাৎ গ্যাস স্টেশনে লাইনে অপেক্ষমান। অতএব.... মাথা পেতে দিলুম।


সচলায়তনে প্রকাশিত